পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। ছবি: সংগৃহীত।
অভিযোগ উঠছিল গত দু’বছর ধরেই। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সরাসরি কবুল করে নিলেন তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের ডেরায় পাক সেনার হানাদারি কথা! সেই সঙ্গে তাঁর সদর্প ঘোষণা, ‘‘প্রয়োজনে ভবিষ্যেতেও সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে আফগানিস্তানে আমাদের সেনা অভিযান চলবে।’’
২০২২ সালে অগস্টে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সঙ্গে ইসলামাবাদের শান্তি আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। তার পরেই আফগান সীমান্তে শুরু হয় পাক সেনার ‘জঙ্গিদমন অভিযান’। সে সময়ই আফগান গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান রহমতউল্লা নবিল সীমান্ত পেরিয়ে তালিবান বিরোধী অভিযানের অভিযোগ তুলেছিলেন পাক ফৌজের বিরুদ্ধে।
গত দু’বছরে একাধিক বার একই অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, পাক বায়ুসেনাও আফগানিস্তানের মাটিতে বোমাবর্ষণ করেছে বলে কাবুলের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু এই প্রথম বার পাক সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা মেনে নেওয়া হল। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে আমরা আফগানিস্তানের অভিযান চালাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও আমরা অভিযান অব্যাহত রাখব। আমরা জঙ্গিদের সমাদর করতে পারি না। হামলা হলে আমরাও পাল্টা হামলা চালাব।’’
কিন্তু অন্য একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশে এ ভাবে হামলা চালানো তো আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী অবৈধ? অভিযোগ নস্যাৎ করে আসিফের মন্তব্য, ‘‘পাকিস্তান সম্ভাব্য সেনা অভিযানের বিষয়ে তালিবানকে সরকারকে জানানোর কোনও প্রয়োজনই অনুভব করে না।’’ প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান-সহ খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিস্তীর্ণ অংশে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রয়েছে টিটিপি-র। বালুচিস্তান প্রদেশের উত্তরাংশেও তাদের প্রভাব রয়েছে।
আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত এই গোষ্ঠী বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি জঙ্গিরা। এর আগে ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ করেছিল পাক সেনা। পাকিস্তানের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সেটিই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবিরোধী সেনা অভিযান। আসিফের ইঙ্গিত, এ বার হবে তার চেয়েও বড় মাপের অভিযান। প্রসঙ্গত, তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মহম্মদ ওমরের ছেলে তথা আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মহম্মদ ইয়াকুবের দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ রয়েছে ইসলামাবাদের। এই পরিস্থিতিতে পাক মন্ত্রীর ঘোষণায় নতুন করে সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy