ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা। দুপুর থেকেই সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়। সকলেই এসেছেন পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে। এসেছেন বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতারাও। পোপের শেষকৃত্য উপলক্ষে শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রইল ভ্যাটিকান।
সেন্ট পিটার্সের সামনের রাজকীয় বারোক প্লাজ়ায় পোপের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর পর রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাগিওর ব্যাসিলিকায় সমাহিত করা হবে পোপকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সহ বিশ্বের নানা দেশের নেতারা। এসেছিলেন প্রায় ২০০,০০০ মানুষ। সব দিক সামাল দিতে ইতালি এবং ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতিও ছিল তুঙ্গে। ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। এই শেষকৃত্যের মাধ্যমে শনিবার থেকে পোপ ফ্রান্সিসের জন্য ন’দিনের আনুষ্ঠানিক ভ্যাটিকান শোকপালনের প্রথম দিন শুরু হল।
আরও পড়ুন:
এর পর পোপের স্মরণে একে একে স্মৃতিচারণ করতে শুরু করেন কার্ডিনালেরা। সদ্য অভিবাসী বিতাড়নে তৎপর ট্রাম্পের সামনেই কার্ডিনাল জিওভান্নি বাত্তিস্তা রে বলেন, ‘‘পোপ ফ্রান্সিস শরণার্থী, অভিবাসী এবং দরিদ্রদের সাহায্যের জন্য অনবরত চেষ্টা করে গিয়েছেন। বাস্তুচ্যুত মানুষের পক্ষে বার বার সওয়াল করেছেন তিনি।’’
আড়ম্বরহীন জীবনযাপনে অভ্যস্ত পোপ ফ্রান্সিস তাঁর শেষ ইচ্ছা হিসাবে জানিয়েছিলেন, প্রথামাফিক সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার পরিবর্তে তাঁকে যেন সমাহিত করা হয় ‘পেপাল ব্যাসিলিকা অব সেন্ট মেরি মেজর’-এ। তাঁর শেষ ইচ্ছাপত্রে পোপ লিখেছিলেন, “সারা জীবন আমি মা মেরির সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি। তাই সেন্ট মেরি মেজর ব্যাসিলিকায় আমার দেহ রাখা হোক।” তিনি আরও লেখেন, “সমাধির স্থানটি যেন মাটিতে হয়, কোনও বাড়তি অলঙ্করণের প্রয়োজন নেই।” তাঁর ইচ্ছাকে শ্রদ্ধা জানিয়েই পোপের মরদেহ পূর্ববর্তী পোপদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ব্যবহৃত সাইপ্রেস, সীসা এবং ওক কাঠের ঐতিহ্যবাহী তিন স্তরবিশিষ্ট কফিনের পরিবর্তে রাখা হয় কাঠের একটি সাদামাটা কফিনে।
২০১৩ সালে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের পদত্যাগের পর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন ফ্রান্সিস। তবে ৮৮ বছর বয়সি পোপ গত বেশ কয়েক দিন ধরেই নিউমোনিয়া সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে (স্থানীয় সময় অনুসারে) ভ্যাটিক্যানে তাঁর বাসভবন কাসা সান্টা মার্টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।