Objectophilia makes people wed weirdest things dgtl
objectophilia
পুতুল, স্মার্টফোন, বালিশ, রোলার কোস্টার... কেন জড় পদার্থকে বিয়ে করে মানুষ
জোয়াকিম বিয়ে করেছেন স্টিম ইঞ্জিনচালিত আস্ত একটি ট্রেনকে। জানিয়েছেন, ছোট থেকেই ভাঙা যন্ত্রপাতি মেরামত করতে ভালবাসেন। সেই প্রেম থেকেই ইঞ্জিনকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সুদর্শন পুরুষ বা সুন্দরী নারী নয়। কখনও কখনও মানুষ জীবনসঙ্গী নির্বাচন করে জড় পদার্থকেও। বার্লিনের প্রাচীর, আইফেল টাওয়ার থেকে শুরু করে মাথার বালিশ! সবই আছে ‘উপযুক্ত জীবনসঙ্গী’-র তালিকায়। অদ্ভুত এই প্রবণতার পোশাকি নাম ‘অবজেক্ট সেক্সুয়ালিটি’ বা ‘অবজেক্টোফিলিয়া’।
০২২০
সম্প্রতি মস্কোর বাসিন্দা রেন গর্ন বিয়ে করেছেন তাঁর ব্রিফকেসকে। আদরের ব্রিফকেসের নাম দিয়েছেন ‘গাইডেয়ন’। রেন জানিয়েছেন, তাঁরও বয়ফ্রেন্ড ছিল। কিন্তু প্রেমিকের থেকে ব্রিফকেসের প্রতিই তাঁর আসক্তি বেশি।
০৩২০
রেন-গাইডেনের সম্পর্ক আবার নতুন করে খবরে এনেছে এই প্রবণতাকে। এই আজব শুভ পরিণয় আগে আরও ঘটেছে বহু।
০৪২০
লস অ্যাঞ্জলসের বাসিন্দা অ্যারন শার্ভেনাক পেশায় ছবি পরিচালক। তিনি বিয়ে করেছেন নিজের স্মার্টফোনকে। জানিয়েছেন, নিজের প্রতি ঠিক থাকতেই এই সিদ্ধান্ত। কারণ তাঁর সব আবেগের সঙ্গী ওই ফোন। সকালে ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া। তাঁর সঙ্গী হয় স্মার্টফোন। সবথেকে বেশি সময় কাটানো সেই জিনিসটিকেই নিজের জীবনসঙ্গী করেছেন তিনি।
০৫২০
জোয়াকিম বিয়ে করেছেন স্টিম ইঞ্জিনচালিত আস্ত একটি ট্রেনকে। জানিয়েছেন, ছোট থেকেই ভাঙা যন্ত্রপাতি মেরামত করতে ভালবাসেন। সেই প্রেম থেকেই ইঞ্জিনকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত।
০৬২০
১৯৮৯ সালে বার্লিনের প্রাচীরকে যখন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল, শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছিলেন এইজা রিট্টা। পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির এক হয়ে যাওয়ার আনন্দে গা ভাসাতে পারেননি তিনি। কারণ বার্লিনের প্রাচীর ছিল তাঁর স্বামী!
০৭২০
তিনি জানান, ৭ বছর বয়সে প্রাচীরের প্রেমে পড়েছিলেন স্রেফ টিভি দেখে! প্রায়ই টাকা জমিয়ে জার্মানির অন্য প্রান্ত থেকে বার্লিনে আসতেন প্রাচীরের কাছে। ১৯৭৯ সালে বিয়ে করেন প্রাচীরকেই। ১৯৮৯ সালের পরে আর আসেননি ‘স্বামীর’ কাছে। বাড়িতে রেখে দিয়েছেন প্রাচীরের পুরনো মডেল। পদবি ব্যবহার করেন ‘বার্লিনার মাউয়ার’। জার্মান ভাষায় যার অর্থ ‘বার্লিনের প্রাচীর’।
০৮২০
নেনে অ্যানেগাসাকি হল একটি ভিডিয়ো গেমের চরিত্র। তাকে বিয়ে করেছেন এক যুবক। তিনি নিজের আসল নাম প্রকাশ করেন না। পরিবর্তে নাম নিয়েছেন ‘সাল ৯০০০’। ‘লভ প্লাস’ গেমের নেনে-ই তাঁর ‘স্ত্রী’।
০৯২০
২০১৬ সালে হংকংয়ে তাঁর প্রদর্শনীতে শিল্পী ট্রেসি এমিন জানান তিনি বিয়ে করেছেন একটি পাথরকে। বিশাল পাথরটি সাজানো থাকে তাঁর বাড়ির বাগানে।
১০২০
পেনসিলভানিয়ার অ্যামি উলফ ওয়েবার গির্জায় অর্গ্যান বাজান। তিনি বিয়ে করেছেন একটি রোলার কোস্টারকে। ৮০ ফুট উঁচু ওই রাইডে তিনি প্রথম চড়েন ১৩ বছর বয়সে। তার পর থেকেই আকর্ষণ অনুভব করেন তিনি।
১১২০
অ্যানি জানিয়েছেন, রোলার কোস্টারের সঙ্গে তাঁর শারীরিক ও মানসিক দুই রকমের সম্পর্কই আছে। তবে অন্যরা তাঁর ‘স্বামীর’ উপর বসে রাইড উপভোগ করলেও তাঁর হিংসে হয় না। ওই রোলার কোস্টার নির্মাণ করেছে ওয়েবার কোম্পানি। তাই নিজের পদবিও ‘ওয়েবার’-ই করেছেন অ্যানি।
১২২০
আমেরিকার এরিকা বিয়ে করেছেন আইফেল টাওয়ারকে। এর স্থাপত্যে তিনি মুগ্ধ ছোট থেকেই। বড় হয়ে বিয়ে করেছেন এই সৌধকেই। বিয়ের পর থেকে তাঁর পরিচয় এরিকা আইফেল। জানিয়েছেন, মনের ইচ্ছে পূর্ণ করে জীবনকে উপভোগ করেছন তিনি।
১৩২০
১৩। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর ২০ বছর পরে তাইওয়ানের ৪৬ বছর বয়সি চাং-সি-সুম বিয়ে করেছেন বার্বি ডলকে। এ ভাবেই তিনি নাকি শান্ত করেছেন তাঁর প্রয়াত স্ত্রীর আত্মাকে। (প্রতীকী চিত্র)
১৪২০
তবে এই ২০ বছরও তিনি একা ছিলেন না। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে বিয়ে করেছিলেন এক মহিলাকেই। তার পর তাঁর শুভেচ্ছা নিয়েই নতুন জীবনসঙ্গী করেছেন বার্বি ডলকে। মানবী ও পুতুল, দুই স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গেই সংসার করেন তিনি। (প্রতীকী চিত্র)
১৫২০
চিনের গুংঝাউ প্রদেশের বাসিন্দা লিউ ইয়ে বিয়ে করেছেন তাঁর নিজের ছবিকেই। সেই ছবিতে তিনি আবার দাঁড়িয়ে আছেন বিয়ের পোশাকেই।
১৬২০
৩৫ বছর বয়সি বিল রিফকা মনোবিজ্ঞানের ছাত্র। তিনি বিয়ে করেছেন তাঁর আই বুক-কে। বিল জানিয়েছেন তাঁর আই বুক পুরুষ। তাঁর সঙ্গে তিনি সমকামী সম্পর্কে আছেন।
১৭২০
জনৈক ডেভক্যাট ২০০০ সালে বিয়ে করেছেন একটি সেক্স ডলকে। সঙ্গিনীর নাম তিনি দিয়েছেন ‘কোয়াইট’। জানিয়েছেন, মানবীর তুলনায় পুতুলকে নিয়েই তিনি খুশি।
১৮২০
ব্রিটিশ নাগরিক এম্মা বিয়ে করেছেন তাঁর প্রিয় রেডিয়ো সেটটিকে। কোরিয়ার বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সি লি জিং গু তাঁর জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন বালিশকে।
১৯২০
আমাদের দেশে গাছের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রথা আছে প্রাচীন কাল থেকেই। শোনা যায়, মাঙ্গলিক দোষ কাটাতে অভিষেক বচ্চনকে বিয়ে করার আগে ঐশ্বর্যার বিয়ে দেওয়া হয়েছিল গাছের সঙ্গে। যদিও বচ্চন পরিবার এই দাবি অস্বীকার করে।
২০২০
কিন্তু প্রথার বাইরে যখন স্বেচ্ছায় মানুষ এই সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তার পিছনে জটিল মনস্তাত্বিক কারণ থাকে। মনোবিজ্ঞানীদের কথায়, অনেক মানুষই একতরফা সম্পর্কে বিশ্বাস করেন। কারণ তাঁরা সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছ থেকে আঘাত পেতে চান না। জড় পদার্থ হলে মানসিক বা শারীরিক আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তা ছাড়া তীব্র অধিকারবোধ থেকেও অনেক সময় এই সিদ্ধান্ত নেয় মানুষ। ব্যাখ্যা মনোবিদদের।