খেলাচ্ছলে: করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই কার্নিভাল ভাইরাসের। মঙ্গলবার জার্মানির ডুসেলডর্ফে। এপি
চিনে প্রকোপ কিছুটা কমলেও মারণ ভাইরাস এ বার চোখ রাঙাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ইটালির মতো দেশে। অনেক টালবাহানা পরে ভারতীয় বিমানকে সে দেশে নামতে দিতে রাজি হয়েছে চিন। আগামিকাল উহানে নামতে পারে ভারতের বিমানটি। ‘ডায়মন্ড প্রিসেন্স’ জাহােজ আটকে পড়া ভারতীয়দের আগামিকালই দেশে ফিরিয়ে আনা হতে পারে।
করোনাভাইরাসের আক্রমণে ইরানে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ৬১ ছাড়িয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন স্বয়ং দেশের উপস্বাস্থ্য মন্ত্রীও। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে টুইট করে এ কথা জানানো হয়েছে। গত কালও সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন উপস্বাস্থ্য মন্ত্রী ইরাজ হারিরচি। করোনা-সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁকে বারবার কাশতে দেখা যায়। ঘনঘন ঘামছিলেনও তিনি। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই ভাইরাসের আতঙ্কে কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে ইরানবাসীর। যাঁদের বেরোতেই হচ্ছে, তাঁরা মুখে মাস্ক পরছেন। পরিস্থিতি দেখে ইরানমুখী ও সেখান থেকে আসা সমস্ত উড়ান আগামী এক সপ্তাহের জন্য বাতিল করেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। ফলে মুশকিলে পড়বেন ইরানের অন্তত আট কোটি মানুষ। ইরাকেও এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে সে দেশের সরকার।
আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ইটালি আর দক্ষিণ কোরিয়াতেও। ইটালিতে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন আজ ভাইরাস-আক্রান্ত দায়েগু প্রদেশে গিয়েছিলেন। আপাদমস্তক ঢাকা পোশাকে তাঁকে হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০। মুন বলেছেন, ‘‘এখানকার পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্যকর্মীরা এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে সব রকমের চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’
এই মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে মার্কিন কংগ্রেসকে আপাতত আড়াইশো কোটি ডলার বরাদ্দ করতে বলেছে হোয়াইট হাউস। ভারত সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নয়াদিল্লি ছাড়ার আগে জানিয়েছেন, করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় চিনে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৭১ জনের। চিনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন (এনএইচসি)-এর তথ্য অনুযায়ী, আজ পর্যন্ত কেভিড-১৯-এর আক্রমণে মারা গিয়েছেন ২,৬৬৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ৭৭,৬৫৮। চিন ছাড়াও প্রায় ৩২টি দেশে আক্রান্ত আরও তিন হাজার। এনএইচসি-র দেওয়া তথ্যই জানাচ্ছে, গত কয়েক দিনে চিনে অনেকটাই কমেছে রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হুবেই প্রদেশের ছবিটা এখন কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। গত কাল পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন নতুন করে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজারের নীচে রয়েছে।
চিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের তুলনায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা রোগীদের সংখ্যাটাও গত কয়েক দিনে অনেকটা বেশি। গত কালই আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ বলে ঘোষণা করেছেন চিনের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসকেরা। যে উহানে করোনা-আক্রান্ত রোগীদের জন্য হাসপাতালে ঠাঁই পাওয়া যাচ্ছিল না, সেখানেই কয়েকটি হাসপাতাল আজ জানিয়েছে, তাদের কাছে এখন কিছু শয্যা খালি রয়েছে। তবে চিনের এই ছবি দেখে এখনই স্বস্তির কিছু নেই বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের কর্তারা মনে করছেন, এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ের পথ এখনও অনেকটাই বাকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy