বরফে ঢাকা টেক্সাস। নিজস্ব চিত্র।
তিন দিন হয়ে গেল। আমেরিকার টেক্সাস প্রদেশের প্রায় কুড়ি লক্ষেরও বেশি বাড়ি বিদ্যুৎহীন। বাইরের তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ না-থাকায় ঘরে হিটারটুকুও জ্বালাতে পারছেন না বেশির ভাগ বাসিন্দা। সেই সঙ্গেই চলছে চরম জলকষ্ট। অতিরিক্ত ঠান্ডায় বেশির ভাগ জল সরবরাহের পাইপলাইনে বরফ জমে ফাটল ধরেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় কাজ করছে না পাম্পিং স্টেশনগুলির জীবাণুনাশক যন্ত্রও। এই পরিস্থিতিতে গোটা প্রদেশের প্রায় ১০০টি কাউন্টির বাসিন্দাদের জল ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।
মেক্সিকো উপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চল বলে টেক্সাসে শীতকালে হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা নামে না বললেই চলে। মাঝে মধ্যে যা তুষারপাত হয়, তা খুবই সামান্য। তবে এ বছর তুষার-ঝড় আর প্রবল ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন। আগামী কয়েক দিনেও তুষার-ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দফতর।
এই চরম প্রতিকূল আবহাওয়ায় ইতিমধ্যেই গোটা প্রদেশে মৃত্যু হয়েছে দু’ডজনেরও বেশি মানুষের। এখনও অনেকেই নিখোঁজ। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ-প্রশাসন। বেশ কিছু এলাকায় গির্জা বা বড় দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য। ব্যবস্থা করা হয়েছে, কম্বল, হিটারের। তাই এ সবের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দক্ষিণ পাড্রে দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় সাড়ে তিন হাজার কচ্ছপকে বরফ থেকে উদ্ধার করে সংরক্ষণ কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন।
টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট আগামী কয়েক দিন সকলকে বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। খুব শীঘ্রই বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবারহ স্বাভাবিক করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
তবে গভর্নরের আশ্বাসে খুব একটা ভরসা রাখতে পারছেন না এখানকার মানুষ। প্রায় ৫০ ঘণ্টারও বেশি সময় বিদ্যুৎ ছিল না হিউস্টনের প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তীর বাড়িতে। প্রবল ঠান্ডায় তিন সন্তানকে নিয়ে কার্যত আতান্তরে পড়েছিলেন তিনি। প্রবাসী এই বাঙালিনি বললেন, ‘‘প্রায় ১৪ বছর এখানে আছি। এত বরফ আগে কখনও দেখিনি। জল নেই। বাড়িতে হিটার জ্বলছে না। কোনও মতে ফায়ার প্লেসের ধারেই দু’টো রাত কাটিয়েছি আমরা।’’ তিনি আরও জানালেন, তাঁদের বাড়ির গ্যাসের পাইপলাইন ঠিক ছিল বলে রান্না হয়েছে। প্রতিবেশীদের অনেকেই ইলেকট্রিক হিটারে রান্না করেন। তাঁদের কারও বাড়িতেই দু’দিন রান্না হয়নি। তিন দিন জল নেই তাঁর এক বান্ধবীর বাড়ি। সপরিবার তিনিও এখন তাঁর বাড়িতেই আছেন। প্রিয়াঙ্কার কথায়, ‘‘ইন্টারনেট ছিল না। ফোনের নেট প্যাকও ফুরোনোর দিকে। গত কয়েক দিন গোটা দুনিয়া থেকেই বিচ্ছিন্ন ছিলাম।’’ এর মধ্যে তুষার ঝড় এলে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানালেন তিনি।
শুধু টেক্সাসই নয়। তুষার-ঝড়ের প্রভাব পড়তে চলেছে নিউ ইয়র্ক-সহ আরও কিছু এলাকায়। প্রতিকূল আবহাওয়ায় মিশিগান সফর বাতিল করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy