নীরব মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
পিএনবি-র ১৪ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার মামলার অভিযোগ তো ছিলই। এ বার ছ’জনকে চুরির অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়া এবং খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠল হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদীর বিরুদ্ধে। নীরব মোদীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন তাঁর একাধিক ভুয়ো সংস্থার সহযোগীরা। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জমা করেছে সিবিআই।
চলতি সপ্তাহ থেকে ওই আদালতে নীরব মোদীর প্রত্যর্পণ মামলার শুনানি চলছে। শুনানির সময় জমা দেওয়া ওই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, ছ’জন ভারতীয়র প্রত্যেকেই নীরব মোদীর বিরুদ্ধে প্রায় একই অভিযোগ করছেন। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেকেরই আরও দাবি, দুবাই থেকে তাঁদের মিশরের কায়রোতে যেতে বাধ্য করা হয়। সেখানে পৌঁছনোর পর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে তাঁদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু সন্দেহজনক নথিপত্রে স্বাক্ষর করান নীরব মোদীর ভাই নেহাল মোদী।
ভিডিয়োর একটি অংশে আশিসকুমার মোহনভাই লাড নামে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘নীরব মোদী আমাকে ফোন করে বলেছিলেন চুরির অভিযোগ ফাঁসিয়ে দেবেন। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার... বলেছিলেন, আমাকে খুন করিয়ে দেবেন।’’ ২০১৮-র জুন মাস থেকে রেকর্ডিং করা ওই ভিডিয়োতে আশিসকুমার নিজের পরিচয় দিয়েছেন হংকংয়ের সানসাইন জেমস লিমিটেড এবং দুবাইয়ের ইউনিটি ট্রে়ডিং এফজেডই নামে দু’টি সংস্থার মালিক হিসাবে। আশিসকুমার ছাড়াও নীরবের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী যে ক’জন সিবিআইয়ের সাক্ষী, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, শারজার এম্পায়ার জেমস এফজেডই নামে এক সংস্থার মালিক ঋষভ জেঠওয়া, হংকংয়ের অরাজেম কোম্পানি লিমিটেডের ডিরেক্টর সোনু মেহতা, আজমানের ইউনিক ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলারির মালিক শ্রীধর মায়েকর এবং দুবাইয়ের হ্যামিল্টন প্রেসাস ট্রেডার্স লিমিটেডের মালিক নীলেশকুমার বলবন্তরাই মিস্ত্রি। জেঠওয়ার দাবি, ‘‘ওই নথিপত্রে সই না করা পর্যন্ত আমাদের পাসপোর্ট আটকে রেখে দেওয়া হয়েছিল।’’
আরও পড়ুন: ১০৫টি বিশেষ ট্রেন আসছে রাজ্যে, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, প্রকাশ হল তালিকাও
নীরব মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ছাড়াও নিজেদের প্রাণনাশের আশঙ্কা করেছেন ওই ছ’জন। ভিডিয়োতে হিন্দি এবং গুজরাতি ভাষায় তাঁদের বলতে শোনা গিয়েছে, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা হওয়ার জন্যই এই ভিডিয়োটি রেকর্ড করছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, দেশে ফিরতে চাইলেও সেখানে গেলেই তাঁদের আটকে রাখা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।
আরও পড়ুন: অসামরিক ব্যক্তিদের ৩ বছরের জন্য বাহিনীতে যোগদানের প্রস্তাব ভারতীয় সেনার
এই মামলার তদন্তে নেমে ইডি জানতে পারে, হংকং এবং দুবাইয়ে বহু ভুয়ো সংস্থায় ডিরেক্টর, ম্যানেজার হিসাবে নিয়োগ করা ছাড়াও বেশ কিছু সংস্থার মালিকানা দেওয়া হয়েছিল বহু ব্যক্তিকে। তবে তা আসলে লোকদেখানো। ওই সংস্থাগুলির দায়িত্ব তাঁদের কাঁধে থাকলেও তার রাশ পুরোপুরি ছিল নীরব মোদীর হাতে। এই ছ’জনও সেই রকমই এক একটি ভুয়ো সংস্থায় মালিক বা উচ্চপদস্থ কর্তা হিসাবে বহাল ছিলেন।
আরও পড়ুন: করোনাকে হয়তো পুরোপুরি ধ্বংস করা যাবে না, মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
৪৯ বছরের নীরব মোদীর বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। ভারত সরকারের অভিযোগ, ওই ছয় সংস্থার জন্য পিএনবি-র একাধিক কর্মী নীরব মোদীর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ওই ব্যাঙ্ক থেকে লেটার অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এলওইউ) ইস্যু করতে সাহায্য করে। যাতে কোনও কিছু খতিয়ে না দেখেই ঋণ পেতে পারে নীরবের সংস্থাগুলি। নীরবের বিরুদ্ধে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)-র তরফে ১৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই ফেরার হয়ে যান তিনি। ব্রিটেনে তাঁর দেখা পাওয়ার পর সে দেশ থেকে তাঁর প্রত্যর্পণের চেষ্টা শুরু করেছে ভারত সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy