প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করত কচি কচি মুখগুলি। নাৎসি বন্দি শিবিরে ধুঁকতে থাকা ৬৬৯ জন শিশুর কাছে রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা দিয়েছিলেন তিনি। বুধবার লন্ডনের এক হাসপাতালে মৃত্যু হল সেই নিকোলাস উইনটনের। ১০৬ বছর বয়সে। তাঁর জামাই জানিয়েছেন, ঘুমের মধ্যেই মারা গিয়েছেন ‘ব্রিটেনের অস্কার শিন্ডলার্স’।
‘ব্রিটেনের শিন্ডলার্স’ নামেই ডাকা হতো উইনটনকে। জার্মানির শিল্পপতি অস্কার শিন্ডলার্সই তো নাৎসি বন্দি শিবির থেকে রক্ষা করেছিলেন ১,২০০ জনের প্রাণ। শিন্ডলার্সের মতো উইনটন নাৎসি ক্যাম্প থেকে বাঁচিয়েছিলেন ৬৬৯ জন শিশুকে।
১৯৩৯ সাল। চেকোস্লোভাকিয়া তখন নাৎসিদের দখলে। স্টকব্রোকার হিসেবে তরুণ উইনটন তখন প্রাগে কর্মরত। কাজের ফাঁকে ফাঁকেই তিনি নাৎসি বন্দিশিবির থেকে শিশুদের বাঁচানোর কাজ শুরু করেন। বন্দি ৬৬৯ জন শিশুকে উদ্ধার করে আটটি ট্রেনে তাদের ব্রিটেনে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।
কিন্তু এই কাজটি সহজ ছিল না। এর জন্য টাকার ব্যবস্থা, উদ্ধার শিশুদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কোনও পরিবারের খোঁজ করা, তাঁদের ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য নকল কাগজপত্র জোগাড়ের কাজও করতে হয়েছে উইনটনকে। সবই ৬৬৯টি শিশুকে বাঁচানোর জন্য।
উইনটনের কৃতিত্বের কথা দীর্ঘদিন কেউ জানতেই পারেননি। প্রচারবিমুখ মানুষটিও নিজের মুখে কিছু বলেননি। উইনটনের স্ত্রী একটি খাতা খুঁজে পান। কী ভাবে উইনটন ওই ৬৬৯টি শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন, ছবি-সহ তার বর্ণনা ছিল সেখানে। এর পরেই সবাই জানতে পারেন উইনটনের কথা। ‘দ্য পাওয়ার অব গুড: নিকোলাস উইনটন’ নামে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করা হয়। ‘পাওয়ার অব গুড’-এর প্রতীক সেই উইনটনের মৃত্যুতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের টুইট, ‘‘পৃথিবী এক মহান মানুষকে হারাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy