ব্যর্থ চেষ্টা: পালাতে গিয়ে রায়ট পুলিশের হাতে আটক হচ্ছেন হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের অধিকাংশই কলেজ পড়ুয়া। মঙ্গলবার হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে। এএফপি
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর খালি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশাসনিক প্রধান ক্যারি ল্যাম। কিন্তু পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর নাম নিচ্ছেন না আন্দোলকারী পড়ুয়ারা। ফলে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও ক্যাম্পাস জট কাটল না হংকংয়ে।
গত সপ্তাহান্ত থেকে হংকংয়ের পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর দখল করে রেখেছিল শ’খানেক পড়ুয়ার একটি দল। সেখান থেকে ছাত্রছাত্রীদের উৎখাত করতে গেলে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। হংকং পুলিশের দাবি, ছাত্ররা তাদের লক্ষ্য করে বোতল বোমা ছোড়েন। ইট, পাথর দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। তাঁরা ধারালো অস্ত্রও ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ পুলিশের। এই অবস্থায় আজই ক্যারি ল্যাম হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, আত্মসমর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর অবিলম্বে খালি করে দিতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। কিন্তু আজ রাত পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনড় পড়ুয়ারা। একশোরও বেশি তরুণ-তরুণী এখনও ব্যারিকেড করে রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। তবে ক্যাম্পাস জট কাটাতে এখনই সেনার সাহায্য নেওয়া হবে না বলে আজ ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্যারি। তাঁর দাবি, শান্তিপূর্ণ ভাবেই সমাধানের রাস্তা বার করতে চায় তাঁর প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে পড়ুয়াদের বাড়ির লোকজনের। কাল রাত থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ভিড় বাড়ছে তাঁদের। এক মহিলা সাংবাদিকদের জানান, তাঁর ষোলো বছরের মেয়ে শনিবার রাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে। প্রশাসন নাবালক-নাবালিকাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না-নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আতঙ্কে রয়েছেন ওই মহিলা।
তবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে গত কাল রাতে এক দল পড়ুয়া ক্যাম্পাস ছেড়ে বেরিয়েছেন বলে দাবি সংবাদমাধ্যমের। দড়ির সাহায্যে একটি সেতুতে নামতে দেখা গিয়েছে এক দল ছাত্রছাত্রীকে। সেখানে অপেক্ষারত কয়েকটি মোটরবাইকে করেই ওই পডুয়ারা পালান বলে অনুমান।
আজই হংকংয়ের পুলিশ প্রধান বদল করেছে চিন। ক্রিস ট্যাং পিং-কেওং আজ শপথ নিয়ে বলেছেন, ‘‘এখন হংকংয়ে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখাটা জরুরি। অবৈধ ভাবে অনেকেই পুলিশের উপরে হামলা করছে। এটা বরদাস্ত করা হবে না।’’ হংকংয়ের আন্দোলনকারীদের প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে চিনও। এমনিতেই গত কয়েক দিনে চিনা সেনা মোতায়েনের সংখ্যা বেড়েছে হংকংয়ে। তার উপরে আজ হংকং হাইকোর্টের একটি রায়কে মানতে কার্যত অস্বীকার করেছে বেজিং। গত অক্টোবরে মুখোশ পরে মিছিল করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন হংকংয়ের প্রশাসনিক প্রধান ক্যারি। হংকং হাইকোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়। যাতে ক্ষিপ্ত বেজিং। পিপলস রিপাবলিক কংগ্রেসের মুখপাত্র আজ সাফ জানান, প্রয়োজনে হংকংয়ের সংবিধানকে সরিয়ে চিনের মূল সংবিধানই মানতে হবে হংকংয়ের মানুষকে। যে কোনও সময়ে আইন পরিবর্তন করতে পারে চিন। এক দেশ দুই নীতির উপরে যা সব চেয়ে বড় ধাক্কা হতে চলেছে বলে মনে করছেন হংকং পার্লামেন্টের গণতন্ত্রকামী সদস্যেরা। গত কাল লন্ডনে চিনা রাষ্ট্রদূত সাফ জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে দেখলে যে কোনও মূল্যে হংকংয়ে শান্তি ফেরাতে তৎপর হবে চিন।
তবে চিনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও হংকংয়ের পরিস্থিতি নিয়ে ফের উদ্বেগ জানিয়েছে আমেরিকা। এ বার সরাসরি মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘হংকংয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন সরকার খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা চাই, কোনও পক্ষই যেন হিংসাত্মক আচরণ না করেন।’’ একই সঙ্গে চিনের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘আমেরিকা চায় চিন-ব্রিটেন চুক্তি মেনে হংকংয়ের মানুষের অধিকার রক্ষা করুক বেজিং।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy