প্যারিসের শার্ল দ্য গল বিমানবন্দরে মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেবেন তিনিই। বুধবার। ছবি: রয়টার্স।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে নয়াদিল্লি। সেই সঙ্গে চলছে বাংলাদেশে তৈরি হওয়া নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন করে তৈরি করার কৌশল।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, হাসিনা সরকারকে নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে এত দিনের মতবিরোধকে পিছনে রেখে, আমেরিকাকে পাশে নিয়ে বাংলাদেশের নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে নয়াদিল্লি। সে ক্ষেত্রে চিনের তাস খেলা হতে পারে। অর্থাৎ আমেরিকার সঙ্গে দৌত্যে এই বার্তাই দেওয়া হবে, ভারত দুর্বল হয়ে পড়লে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানের হাত ধরে চিন তার শক্তি বাড়াবে। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকার লাভের চেয়ে লোকসানের সম্ভাবনাই বেশি। সাউথ ব্লক আশা করছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট পদে ফের নির্বাচিত হলে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে মোদী সরকারের লাভ হবে। প্রতিবেশী বলয়ে হারিয়ে ফেলা প্রভাব ফিরে পেতেও সুবিধা হতে পারে।
প্রাক্তন বিদেশসচিব তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন হাইকমিশনার হর্ষ শ্রিংলার মতে, “নতুন সরকার গঠন হয়ে গেলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ শুরু করবে নয়াদিল্লি। গত দেড় দশক ধরে ভারত সম্পর্ক তৈরি করেছে। তার ইতিবাচক ফলাফল স্পষ্ট ভাবে দেখা গিয়েছে। আমাদের উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের প্রশ্নে বাংলাদেশ বড় শরিক। সুস্থির, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমাদের জন্য প্রয়োজনীয়।”
পাশাপাশি দেশত্যাগী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য সব রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তাঁকে বলেই দেওয়া হয়েছে, যত দিন তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, এ দেশে থাকতে পারেন। রাশিয়া-সহ বেশ কিছু দেশের সঙ্গে হাসিনার ভবিষ্যতের আশ্রয়ের জন্যও কূটনৈতিক দৌত্য চলছে। হাসিনা-পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ও একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত থেকে তড়িঘড়ি অন্য কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা নেই হাসিনার। ভবিষ্যতে অন্য দেশে যেতেও অসুবিধা নেই। তাঁর কথায়, “মা বাদে পরিবারের সবাই অনেক দিন ধরে বিদেশে আছেন। আমরা তাতে অভ্যস্ত। জীবনযাপনের কোনও অসুবিধা নেই।’’
এ দিকে, বাংলাদেশে অবস্থিত সব ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার ভিসা সেন্টারের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এই তথ্য। পরবর্তী আবেদনের তারিখ এসএমএসে জানানো হবে।
ভারতের দিক থেকে প্রাথমিক অগ্রাধিকার এখন বাংলাদেশে ভারতীয়দের নিরাপত্তা দেওয়া ও যাঁরা চাইছেন, তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা। আজ থেকেই এই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ও পার বাংলা থেকে দেশে ফিরেছেন ২০৫ জন ভারতীয়। এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ উড়ানে বুধবার সকালে ঢাকা থেকেদিল্লি ফিরেছেন তাঁরা। উড়ান সংস্থার এক কর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, মধ্যরাত পেরিয়ে ঢাকায় পৌঁছয় বিমানটি। সেখান থেকে ভারতীয়দের নিয়ে দিল্লি ফেরে। বৃহস্পতিবার থেকে দিল্লি-ঢাকা রুটে ফের বিমান পরিষেবা চালু করছে এয়ার ইন্ডিয়া। ওই রুটে আপাতত দিনে দু’টি উড়ান থাকছে।
ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসে কর্তব্যরত কর্মীসংখ্যা কমানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। দূতাবাসের যে কর্মীদের এখনই সেখানে প্রয়োজন নেই, তাঁদের পরিবার-সহ ফেরানো হচ্ছে। ফেরার বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়, সেটি ওই কর্মীদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। ইচ্ছুকেরা বাণিজ্যিক বিমানে ভারতে ফিরছেন। বর্তমানে অপ্রয়োজনীয় কর্মীসংখ্যা কমালেও ভারতীয় কূটনীতিকেরা এখনও সেখানেই রয়েছেন। খোলা রয়েছে ভারতীয় দূতাবাস-উপদূতাবাসগুলিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy