দীর্ঘদিন ধরেই নিউরোলিঙ্ক একটি ব্রেন-কম্পিউটার তৈরির চেষ্টা করছে। সে খবর তারা আগেই জানিয়েছিল। ছবি: সমাজমাধ্যম।
মগজই অস্ত্র! কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তরুণ। দাবা খেলছেন তিনি। মগজের একটি ইশারায় চোখের পলকে সরে যাচ্ছে কম্পিউটারের কার্সার। ছুঁতেও হচ্ছে না মাউস। প্রতিপক্ষের দিকে কখনও এগিয়ে যাচ্ছে গজ, কখনও বোরে!
গত অর্ধশতকে প্রযুক্তির চোখধাঁধাঁনো উত্থান সকলেরই জানা। মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটার, যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিৎসা ক্ষেত্র কিংবা মহাকাশ গবেষণা, সর্বত্রই রকেট গতিতে এগোচ্ছে বিজ্ঞান। তাতে নবতম চমক ইলন মাস্কের তৈরি এই ‘মগজাস্ত্র’। তাঁর স্টার্ট আপ ‘নিউরোলিঙ্ক’ একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছে এক্স হ্যান্ডলে। তাতে দেখা যাচ্ছে, পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক রোগী নিউরোলিঙ্কের ব্রেন ইমপ্লান্টের সাহায্যে কম্পিউটারে দাবা খেলছেন। মাস্ক তাঁর এই নতুন প্রযুক্তির নাম রেখেছেন ‘টেলিপ্যাথি’।
দীর্ঘদিন ধরেই নিউরোলিঙ্ক একটি ব্রেন-কম্পিউটার তৈরির চেষ্টা করছে। সে খবর তারা আগেই জানিয়েছিল। পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা অন্য কোনও অসুখে শরীর অসাড়, এমন রোগীদের সাহায্য করতে এই যন্ত্রটি তৈরি করছে তারা। এ বছরের গোড়ায় প্রথম কোনও মানুষের মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপন করা হয় যন্ত্রটি। মস্তিষ্কের যে অংশ শরীরের নড়াচড়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে বসানো হয়েছে এটি। প্রথম যে রোগীর শরীরে বসেছে এই যন্ত্র, সেই ২৯ বছর বয়সি নোল্যান্ড আরবাউয়ের দাবা খেলার ভিডিয়োই ছড়িয়েছে ইন্টারনেটে।
একটি দুর্ঘটনায় নোল্যান্ডের মেরুদণ্ডে আঘাত লেগেছিল। কাঁধের নীচ থেকে সারা শরীর পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয় তাঁর। গত বছর ‘নিউরোলিঙ্ক’-কে মানবদেহে পরীক্ষার জন্য অনুমতি দেয় ‘ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’। এ বছর জানুয়ারি মাসে ইলন মাস্ক ঘোষণা করেন, নিউরোলিঙ্কের প্রথম ব্রেন ইমপ্ল্যান্ট সফল হয়েছে। রোগী (নোল্যান্ড) ব্রেন ইমপ্ল্যান্টের সাহায্যে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারছেন। এর পর দু’মাসের ব্যবধানে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করল মাস্কের সংস্থা। ৯ মিনিটের ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, নোল্যান্ড দাবা খেলছেন ল্যাপটপে। ব্যাকগ্রাউন্ডে কোনও গান বাজছিল। সেটা নিজেই থামালেন তিনি। সবটাই তিনি করছেন মস্তিষ্ক ও নিউরোলিঙ্কের ব্রেন-কম্পিউটার সারফেস
ব্যবহার করে।
নোল্যান্ড জানিয়েছেন, খুব ছোট অস্ত্রোপচার হয়েছিল, এক দিন পরেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকে অনেক কিছুই তিনি নিজে একা-একা করতে পারছেন। তবে তিনি এ-ও জানান, নিউরোলিঙ্কের তৈরি প্রযুক্তিটি ‘নির্ভুল’ নয়। আরও নিখুঁত করা দরকার। অবশ্য এ-ও স্বীকার করেছেন, ব্রেন ইমপ্ল্যান্টের সাহায্যে তাঁর জীবন আমূল বদলে গিয়েছে। এখন দীর্ঘমেয়াদি ভাবে এই ইমপ্ল্যান্টের ব্যবহারে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় নাকি, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy