যাত্রা শুরু করতে পারল না নাসার চন্দ্রযান ‘আর্টেমিস ১’। ছবি: রয়টার্স।
বাধা পড়েছে। ফের সেই একই সমস্যা, রকেটের তরল হাইড্রোজেনের ট্যাঙ্কে ছিদ্র। আজও চাঁদের পথে যাত্রা শুরু করতে পারল না নাসার চন্দ্রযান ‘আর্টেমিস ১’।
৫০ বছর পরে ফের চাঁদের মাটিতে পা রাখার স্বপ্ন দেখছে মানুষ। সেই লক্ষ্যেই নাসার নয়া আর্টেমিস অভিযান। চলবে তিনটি ধাপে। যার প্রথম ধাপ ‘আর্টেমিস ১’। এটি যাত্রিবিহীন অভিযান। সফল হলে পরবর্তী অভিযানে চাঁদে পাড়ি দেবে মানুষ। গত ২৯ অগস্ট উৎক্ষেপণের কথা ছিল ‘আর্টেমিস ১’-এর। একেবারে শেষ মুহূর্তে ধরা পড়ে রকেটের তরল হাইড্রোজেনের লাইনে ছিদ্র। কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়েছিল, মাঝপথে থামিয়ে দেওয়া হয় তা। ছুটে আসেন ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করা যায়নি। ফলে সে দিন বাতিল করে দেওয়া হয় অভিযান। উৎক্ষেপণের পরবর্তী দিন ধার্য হয় ২ সেপ্টেম্বর। কিন্তু তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, এত তাড়াতাড়ি কী সমস্যার সমাধান করতে পারবেন নাসার বিজ্ঞানী! সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।
২ সেপ্টেম্বর পেরিয়ে ৩ তারিখ উৎক্ষেপণের দিন ধার্য হয়। আজ সকালেও সবুজ সঙ্কেত দেখিয়েছিল নাসা। মিশন ম্যানেজমেন্ট টিম তাদের ওয়েবসাইটে লিখেও দেয় ‘গো’। জানায়, ‘আর্টেমিস ১’ স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেট এবং ওরিয়ন মহাকাশযান, দু’টিই যাত্রার জন্য প্রস্তুত। হাইড্রোজেন লাইনে যে আর কোনও ছিদ্র নেই, তা-ও নিশ্চিত করেছিল নাসার ম্যানেজমেন্ট টিম। কিন্তু এত করেও রক্ষা হল না। সফর শুরুর এক-দেড় ঘণ্টা আগে নাসা জানাল, আজও অভিযান বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। ফের ছিদ্র ধরা পড়েছে, তরল হাইড্রোজেন চুঁইয়ে বেরোচ্ছে।
‘আর্টেমিস ১’ হল এ পর্যন্ত তৈরি হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেট। এর উৎক্ষেপণের সময়ে রকেটের নীচে থাকা চারটি বড় ইঞ্জিনে ৩০ লক্ষ লিটার প্রচণ্ড ঠান্ডা তরল হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পুড়ে এক প্রকাণ্ড শক্তি উৎপাদিত হয়। যার সাহায্যে মহাকাশে পাড়ি দেয় যান। নাসার অন্দরমহল থেকে জানা গিয়েছে, সকালে কর্মীরা যখন রকেটের হাইড্রোজেন ট্যাঙ্ক ভরতে যান, তখন বিপদঘণ্টি বেজে ওঠে। যা থেকে বোঝা যায়, ফের কোনও ছিদ্র তৈরি হয়েছে। এ বার অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে গড়বড় কোথায় দ্রুত ধরা পড়েছিল। যে অংশ দিয়ে যানের ভিতরে ঢোকে হাইড্রোজেন, সেই সংযোগস্থলে সমস্যা। ইঞ্জিনিয়াররা বহু চেষ্টা করেন সারানোর। কিছুক্ষণের জন্য গরম হতে দেন যন্ত্রাংশ। তাঁদের আশা ছিল, গরম হলে হয়তো ছিদ্রটি বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু সফল হননি তাঁরা।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে (সোমবার বা মঙ্গলবার) ফের উৎক্ষেপণের চেষ্টা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিংয়ে নিয়ে গিয়ে যদি রকেটের যন্ত্রাংশ খুলে রিসেট করতে হয়, তা হলে নাসা যা-ই বলুক, আরও কয়েক সপ্তাহের ধাক্কা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy