Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
nasa

গ্রহাণু ‘বেনু’-তে খোঁড়াখুঁড়ির ছাপ

কী আছে এতে, ভাল করে জানার জন্য ‘ওসিরিস-রেক্স’ নামের যান পাঠিয়েছিল নাসা। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর সেটি বেনুতে খোঁড়াখুঁড়ি চালায়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:১৮
Share: Save:

চাঁদে মানুষ পদচিহ্ন রেখে এসেছে কবেই। মঙ্গলে ছাপ ফেলছে একাধিক ল্যান্ডার ও রোভারের চাকা। উপগ্রহ ও গ্রহের পাশাপাশি, গ্রহাণুর গায়েও এ বার খোঁড়াখুঁড়ির ছাপ রেখে এসেছে মানুষের যন্ত্রপাতি। গ্রহের মতো গ্রহাণুগুলিও সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। তবে আকারে সেগুলি অনেক ছোট। বড়সড় পাথরের খণ্ডের মতো। বেনু তেমনই একটি কার্বন সমৃদ্ধ গ্রহাণু। খুবই অন্ধকার। সূর্যের আলোর ৩০ শতাংশ প্রতিফলিত হয় পৃথিবী থেকে। বেনু থেকে হয় মাত্র ৪ শতাংশ। ফলে এটাকে দেখা বেশ শক্ত কাজ। পৃথিবী থেকে ২৯.৩ কোটি কিলোমিটার দূরের এই অন্ধকার কালো গ্রহাণুটির খোঁজ মিলেছিল ১৯৯৯ সালে।

কী আছে এতে, ভাল করে জানার জন্য ‘ওসিরিস-রেক্স’ নামের যান পাঠিয়েছিল নাসা। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর সেটি বেনুতে খোঁড়াখুঁড়ি চালায়। সংগ্রহ করে এক কেজি পাথর-ধুলোর নমুনা। যা পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে ২০২৩ সালে। ‘ওসিরিস-রেক্স’ এই খোঁড়াখুঁড়ি করার আগে ২০১৯-এর ৭ মার্চ ও পরে ২০২১-এর ৭ এপ্রিল খননস্থলের ছবি তুলেছিল। ছায়া পড়ে যাতে দৃষ্টিবিভ্রম না-ঘটায়, তার জন্য ভরদুপুরে তুলতে হয়েছে ছবিগুলি। সেই ছবি নাসা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে। দেখা যাচ্ছে, বেনুর গায়ে যে খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে, তা বেশ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে আগে ও পরে তোলা ছবির তুলনা করে। দেখা গিয়েছে, অন্তত এক টন ওজনের একটি পাথরের বোল্ডার প্রায় ৪০ ফুট সরে গিয়েছে।

খননের পরে ছবি তোলার বিষয়টি অবশ্য অভিযানের মূল পরিকল্পনায় ছিল না। বেনু থেকে ফিরে আসার আগে ওসিরিস-রেক্স থেকে শেষ বার চক্কর কাটার সময় ছবি তোলা হয়েছিল খানিকটা কৌতূহল মেটাতে ও ইতিহাস ধরে রাখার তাগিদে। তার ফলেই ধরা পড়েছে, মানুষের পাঠানো যন্ত্রের কীর্তিকলাপের ছাপ স্থায়ী স্মৃতি হয়ে রয়ে গিয়েছে বেনুর বুকে।

গ্রহাণুর গায়ে নাড়াচাড়ার বিষয়টির একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বড় কিছু সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এই গ্রহাণুগুলি তৈরি হয়েছিল আজ থেকে ৪৫০ কোটি বছর আগে। সৌরজগতের বয়স তখন মাত্র ১ কোটি বছর। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এগুলি প্রায় অবিকৃত অবস্থায় রয়ে গিয়েছে। এত যুগ পরে এই প্রথম একটি গ্রহাণুতে হাত পড়ল মানুষের। মহাকাশ চর্চার ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক বলা চলে। বেনু থেকে নমুনা আসার পরে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে, কী কী খনিজে সমৃদ্ধ সেটি। সৌরজগত সৃষ্টির সময়ের ইতিহাস আরও ভাল ভাবে জানা সম্ভব হবে। ভাসতে ভাসতে কোনও গ্রহাণু পৃথিবীর উপরে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হলে, সে ক্ষেত্রেও কী ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, তারও পথনির্দেশ মিলতে পারে গ্রহাণুগুলিকে আরও ভাল ভাবে জানতে পারলে। ভবিষ্যতে কোনও দিন মহাকাশ থেকে খনিজ সম্পদ আহরণের প্রচেষ্টাকে নতুন পর্বে পৌঁছে দিতেও হয়তো পথ দেখাবে বেনু গ্রহাণুর এক কেজি নমুনা।

অন্য বিষয়গুলি:

nasa NASA Space Mission Asteroid Belt Bennu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy