ফাইল চিত্র।
আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এক ঢিলে একাধিক ফল লাভের লক্ষ্য রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রতিবেশী কূটনীতি যদি তার একটি দিক হয় তা হলে অন্য দিকে ভোটের মুখে দাঁড়ানো পশ্চিমবঙ্গের বিশেষ সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া তাঁর লক্ষ্য। সফরটিকে তাই ভাগ করে হয়েছে স্পষ্ট দু’ভাগে।
প্রথম দিন অর্থাৎ ২৬ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মোদী যোগ দেবেন ভারত বাংলাদেশ শীর্ষ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে। সেই বৈঠকে যে দিকটি সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে চলেছে, তা আঞ্চলিক সমন্বয় (অর্থনৈতিক)। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে সেতু রচনা করতে উৎসাহী ভারত। এই দু’তরফের মধ্যে বাণিজ্য এবং আর্থিক লেনদেন বাড়ানোটা মুখ্য লক্ষ্য, যাতে লাভবান হবে নয়াদিল্লি ও ঢাকা— উভয়পক্ষই। এই সফরের পর দু’দেশের সীমান্তে রেল, সড়ক এবং বন্দর যোগাযোগ আরও অনেকটাই বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্ডার হাট-এর সংখ্যা বাড়িয়ে সীমান্তে বেআইনি বাণিজ্য এবং চোরাচালান রোখার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে কথা হবে মোদী এবং হাসিনার। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মডেলকে সামনে রেখে সামগ্রিক অঞ্চলের অর্থনীতিকে আরও জমাট করার বিষয়টি উঠে আসবে আলোচনায়।
দু’দেশের ৪,১০০ কিলোমটার সীমান্তের প্রায় ১,৮৮০ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি। মোদীর ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিকে জোরদার করতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের অর্থনীতি, পরিকাঠামোকেও শক্তিশালী করা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের কাছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহায়তা জরুরি ভারতের কাছে। সম্প্রতি শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিয়ো মাধ্যমে ফেনি নদীর উপর সেতুর যৌথ উদ্বোধন করে দুই
নেতাই বলেছেন, এর ফলে লাভবান হবে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল। চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহার করে এখন ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্বে পণ্য পরিবহণ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে রেল এবং সড়ক সংযোগ বাড়াতে আসন্ন বৈঠকে কথা হবে ‘বিবিআইএন’ অর্থাৎ বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল করিডরের কাজ দ্রুত শুরু
করা নিয়েও।
সফরের দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ দিনটিতে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি দর্শনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সে দিন তাঁর সফরের কেন্দ্রবিন্দুতে
থাকছে ওড়াকান্দিতে মতুয়াদের মন্দির দর্শন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেদিনই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হচ্ছে ৮ দফা বিধানসভা ভোটের প্রথম পর্ব। ওই ২৭ তারিখেই সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী মন্দিরে পুজা দেবেন তিনি। ফলে বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এক দিকে হিন্দুত্বের বার্তা দেওয়া অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া ভোটারদের কাছে পৌঁছনো তাঁর সফরের দ্বিতীয়ার্ধের লক্ষ্য। বনগাঁর সাংসদ মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত শান্তনু ঠাকুর এক দিন আগেই পৌঁছে যাবেন ওড়াকান্দিতে। সঙ্গে থাকবে তাঁর কিছু নেতা ও কর্মী। প্রধানমন্ত্রী ওড়াকান্দি, সাতক্ষীরা সফর শেষে দিল্লির বিমান ধরার জন্য ঢাকায় না ফিরে পেট্রাপোল-বেনাপোল হয়ে সড়কপথে কলকাতায় ঢুকতে পারেন মোদী, এমন কথাও একটি
সূত্রে শোনা গিয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সংযোগের একটি বিজ্ঞাপন হিসাবেও মোদীর এই সড়ক পথে যাত্রাকে তুলে ধরা হতে পারে। পাশাপাশি, প্রচার না-করলেও রাজ্যে ভোটের প্রথম দিন মোদীর উপস্থিতি রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট বার্তাবহ। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
এখনও হয়নি। প্রকাশ্যে বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্যও করেননি বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy