কোয়াড বৈঠক শুরুর আগে। ছবি— টুইটার।
চিনকে চাপে রাখতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দুই বন্ধু রাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের সঙ্গে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে (ভারতীয় সময়) বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার প্রায় চব্বিশ ঘন্টা পরেই অর্থাৎ শুক্রবার মধ্যরাতে বসেছে ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াডের বৈঠক।
কোয়াড বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘২০০৪ সালে সুনামির সময়ে আমরা হাত মিলিয়ে কাজ করেছিলাম। পরে কোয়াডের সদস্য হিসেবে কোভিডের মোকাবিলা করেছি। কোয়াড ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে।’’
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলি করে একই সঙ্গে অনেকগুলি কূটনৈতিক লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করা হল ভারতের পক্ষ থেকে। এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভারতকে কার্যত ঘিরে ধরছে। আফগানিস্তানে তালিবান সরকার গঠনের পরে যা এক ধাক্কায় অনেকটাই ঘোরালো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অঞ্চলের শক্তিশালী দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করা, নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত সম্প্রসারণবাদের মোকাবিলা করতেও জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া অপরিহার্য শরিক ভারতের কাছে।
শুধুমাত্র আমেরিকা-নির্ভরতার দিন যে শেষ হয়ে গিয়েছে তা ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে। আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর পরে তা আরও স্পষ্ট। তবে আফগানিস্তান থেকে নজর সরানোর ফলে এ বার পূর্ণশক্তি দিয়ে চিনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে বাইডেন প্রশাসন। আর সে কারণেই এক দিকে কোয়াড, অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন যুদ্ধ প্রযুক্তির অক্ষ তৈরি করছে আমেরিকা। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, চিনকে চাপে রাখা ভারতেরও লক্ষ্য। কিন্তু তা নয়াদিল্লি করতে চায় নিজেদের মতো করে নিক্তিতে মেপে। কারণ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রবল বলশালী চিন, ভারতের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলা একটি দেশ। আমেরিকার কাছে চিন কৌশলগত ভাবে ততটা মারাত্মক চ্যালেঞ্জ নয়। আর তাই চিন নীতির প্রশ্নে আমেরিকার হাতে তামাক খাওয়ার চেয়ে কাছের অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং পূর্ব এশিয়ার ছোট ছোট দেশগুলির সঙ্গে অক্ষ তৈরি হলে তা বিপদে অনেক বেশি কাজে আসবে ভারতের।
আজ মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পরে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন টুইট করে বলেছেন, ‘‘আমার বন্ধু এবং অস্ট্রেলিয়ার পরম মিত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে খুবই খুশি। দু’দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করাই আমাদের লক্ষ্য।’’ বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘উন্মুক্ত, উদার, সমৃদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের লক্ষ্যে, দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেছে।’’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা-র এই প্রথম বৈঠক হল। আলোচনায় উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করার মতো বিষয়। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এবং সমরাস্ত্রের ক্ষেত্রটিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হচ্ছে ‘‘দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি আফগানিস্তান-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। উদার ও মুক্ত ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গঠনে নিজেদের দায়বদ্ধতার বিষয়টি ফিরে দেখেছেন তাঁরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy