নানকানা সাহিব। ফাইল চিত্র।
নানকানা সাহিব গুরুদ্বার অপবিত্র হওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি এবং পাকিস্তানের মাটিতে শিখদের এই ধর্মস্থানটি অক্ষত আছে বলে বিবৃতি দিয়ে জানাল ইমরান খানের বিদেশ মন্ত্রক।
গুরু নানকের জন্মস্থান নানকানা সাহিবের প্রসিদ্ধ গুরুদ্বারটি শিখদের অন্যতম তীর্থস্থান। সেখানেই গত কাল উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভিন্-ধর্মে বিয়ের একটি ঘটনা ঘিরে অশান্তির জেরে কয়েকশো মানুষ নানকানা সাহিব গুরুদ্বার ঘিরে ফেলে। ভিতরে আটকে পড়েন পুণ্যার্থীরা। কিছু দুষ্কৃতী পাথর ছোড়ে বলেও অভিযোগ ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ভিডিয়ো ছড়ায়। রাতেই দিল্লি কড়া বিবৃতি দিয়ে সংখ্যালঘু শিখ সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য পাক সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলে। তারই উত্তরে পাক বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, গুরুদ্বারের কাছে মারপিটের একটি ঘটনা ঘটেছিল। তাকেই সাম্প্রদায়িক রং দেওয়া হয়েছে।
পাক বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, পঞ্জাব প্রদেশের নানকানা সাহিব শহরে গত কালের ওই গন্ডগোল বেধেছিল দু’টি মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যে। একটি চায়ের দোকানে ছোটখাটো কোনও বিবাদ থেকে সেই গন্ডগোলের সূত্রপাত বলে প্রাদেশিক সরকারের থেকে জানা গিয়েছে। জেলা প্রশাসন পত্রপাঠ হস্তক্ষেপ করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। পাক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তা স্পষ্ট। সব চেয়ে বড় কথা, গুরুদ্বার অক্ষত আছে। ওই পবিত্র স্থান ‘অপবিত্র করা’, ‘ভাঙচুর করা’— এ সব দাবির পাশাপাশি আরও যে সব ইঙ্গিত করা হচ্ছে, তা আগাগোড়া মিথ্যেই শুধু নয়, ক্ষতিকরও।’’
পাক বিবৃতিতে অবশ্য ভারতকে পরোক্ষ খোঁচা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, গত কালের বিবৃতিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক বলেছিল, ‘‘ভারত এই অবাধ ভাঙচুর ও পবিত্র স্থানটিকে অপবিত্র করার ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে।’’ আজও বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার ওই ‘তাণ্ডবের’ নিন্দার পাশাপাশি শিখদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে টুইট করেন। পাক বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, সমস্ত মানুষকে, বিশেষত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে তারা বদ্ধপরিকর।
আজ পাকিস্তানের মুসলিম ধর্মগুরুদের এক প্রতিনিধিদল নানকানা সাহিব গুরুদ্বারে গিয়ে শিখ সমাজের সঙ্গে কথা বলেন। যদিও সেই দলে খলিস্তানপন্থী নেতা গোপাল চাওলা থাকায় প্রশ্ন উঠেছে কোনও কোনও মহলে। ভারতে মুসলিম সংগঠন জামাত-এ-ইসলামি হিন্দ নানকানা সাহিবের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাথর ছোড়ায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন জামাতের প্রেসিডেন্ট সাদাতুল্লা হুসেইনি।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ গত কালই টুইটারে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সক্রিয় হওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। উদ্বেগ জানিয়েছিলেন শিরোমণি অকালি দলের নেতা সুখবীর সিংহ বাদলও। আজ অকালি দল, যুব কংগ্রেস এবং দিল্লি শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটি দিল্লিতে পাক হাইকমিশনের কাছে বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভ দেখায় বিজেপিও। শিখদের মিছিল হয় জামশেদপুরে। নানকানা সাহিবের ঘটনার নিন্দা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। টুইটারে রাহুল লেখেন, ‘‘ধর্মান্ধতা সীমান্ত মানে না। এর ওষুধ— ভালবাসা+পারস্পরিক শ্রদ্ধা+সমঝোতা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy