Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Myanmar Conflict

জুন্টার নৌঘাঁটি দখল করে নিল আরাকান আর্মি! এর পর নিশানা মায়ানমারের বাণিজ্য রাজধানী ইয়াঙ্গন?

গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ জানিয়েছে, এর পরে বিদ্রোহীদের নিশানা মায়ানমারের বাণিজ্য রাজধানী।

Myanmar rebel forces captured naval base of Junta in Ayeyarwady Region

মায়ানমারে তৎপরতা বিদ্রোহী বাহিনীর। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৫২
Share: Save:

সীমান্ত দখলের পরে এ বার মায়ানমারের বিদ্রোহীদের ‘নজর’ দেশের প্রশাসনিক এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রে! গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ বুধবার জানিয়েছে, বাণিজ্য রাজধানী (তথা প্রাক্তন রাজধানী) ইয়াঙ্গনের অদূরে থান্ডওয়ে নৌঘাঁটির দখল নিয়েছে বিদ্রোহী জোটের বৃহত্তম শরিক আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। পাশের গাওয়া শহরও তাদের দখলে।

ইরাওয়াদি নদী সংলগ্ন ওই অঞ্চল সামরিক অবস্থানগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাওয়া থেকেই পথ গিয়েছে ইয়াঙ্গন এবং রাজধানী নেপিডোর দিকে। কয়েক মাস আগে কায়কতাও নৌঘাঁটি দখল করেছিল আরাকান আর্মি। কিন্তু এ বার কার্যত মায়ানমারের মূল প্রশাসনিক কেন্দ্রের কাছে চলে এল তারা। ‘দ্য ইরাওয়াদি’র ইঙ্গিত, জুন্টা সরকারকে উৎখাত করতে এর পরে বিদ্রোহীদের যৌথবাহিনী সে দিকেই এগোতে পারে। প্রসঙ্গত, গত ১৩ মাসের গৃহযুদ্ধে এই প্রথম ইরাওয়াদি অববাহিকায় অনুপ্রবেশ করল আরাকান আর্মি।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনের পরে রবিবার রাতে মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের দখল নিয়েছে মায়ানমারের বিদ্রোহীরা! এই অংশেই মায়ানমারের কুকি জনগোষ্ঠীর (যাঁরা সে দেশে কুকি-চিন নামে পরিচিত) বসবাস। ফলে নতুন করে সীমান্ত পেরিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সামরিক জুন্টা সরকারের বাহিনীকে হটিয়ে তাইল্যান্ড এবং চিনের সীমান্তবর্তী এলাকার বড় অংশ কয়েক মাস আগেই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল বিদ্রোহী জোট। চলতি মাসের গোড়ায় বৃহত্তম বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নেতৃত্বে বিদ্রোহী জোট দখল করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশ। এ বার মণিপুর লাগোয়া অঞ্চলও তাদের দখলে গেল। গাওয়ার অদূরেরই সৈকত শহর এনগাপালিতে জুন্টা সেনার ‘ওয়েস্টার্ন কমান্ডে’র সদর দফতর। ইতিমধ্যেই সেখানে আরাকান আর্মি এবং তাদের সহযোগী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি হামলার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

জুন্টাবিরোধী নতুন জোট ‘চিন ব্রাদারহুড’-এর শরিক ‘ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স’, সাগাইন অঞ্চলে সক্রিয় ‘ইয়াও আর্মি’ এবং ‘মনিওয়া পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্স’ চিন প্রদেশ দখলের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে ‘দ্য ইরাওয়াদি’র দাবি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। তার আড়াই বছরের মাথায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’।

পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানায়। বিদ্রোহীদের মদতপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি ‘মুক্ত’ এলাকায় সমান্তরাল সরকার চালানো শুরু করে দিয়েছে। ক্ষমতা দখলের চতুর্থ বর্ষপূর্তির বাকি মাত্র দেড় মাস। বিদ্রোহী বাহিনীর অগ্রগতির মুখে তত দিন কি টিকতে পারবে জুন্টার বাহিনী?

অন্য বিষয়গুলি:

Arakan Army Mayanmar Myanmar Army Myanmar Crisis Myanmar Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy