বরফ জমে রাস্তায় আটকে গাড়ি। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে। — এএফপি
তুষারঝড় থেকে বাঁচতে সপরিবার শহর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে বাড়ি ছেড়ে ছিলেন সাতসকালে। আর সেটাই কাল হল।
সপ্তাহভর প্রবল তুষারপাতে বরফ জমেছিল গাড়ি থেকে ধোঁয়া বেরোনোর জায়গায় (টেলপাইপ)। তা থেকেই বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস বেরিয়ে, গাড়ির মধ্যেই দম বন্ধ হয়ে মারা গেলেন পরিবারের কর্ত্রী, বছর তেইশের সাসালিন রোজা। প্রাণ হারিয়েছে বছর খানেকের ছোট্ট ছেলে মেসিয়া। বছর তিনেকের সানিয়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গাড়ির বাইরে থাকায় এ যাত্রায় বেঁচে গিয়েছেন বাবা ফেলিক্স বনিলা।
ঘটনাটি রবিবারের। হাড় কাঁপানো শীত কিছুতেই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না দেখে বাড়ি ছেড়ে আশপাশে কোথাও ছুটি কাটিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন। স্ত্রী আর দুই সন্তানকে গাড়িতে বসিয়ে রাস্তার বরফ সরাচ্ছিলেন বনিলা। গাড়ির ভিতরটা গরম রাখার জন্য ইঞ্জিন চালু করে রেখেছিলেন। ধোঁয়া বেরোনোর জায়গাটা যে বরফ জমে আটকে আছে, সেটা খেয়ালই করেননি। ইঞ্জিন চালু থাকায় ধোঁয়া তৈরি হতে থাকে। তবে তা বেরোনোর জায়গা না পেয়ে গাড়ির ভিতরই ছড়িয়ে যায়। কাচ বন্ধ ছোট গাড়ির ভিতর নিমেষে ছড়িয়ে যায় কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস। সেন্ট্রাল লকিং সিস্টেমে লক করা গাড়িটির কাচ নামাতে পারেননি রোজা। সাহায্য চেয়ে চিৎকার করলেও তা বনিলার কানে পৌঁছয়নি।
বনিলা যখন গাড়ির কাছে এলেন, তত ক্ষণে লুটিয়ে পড়েছেন রোজারা। সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য চেয়ে পুলিশে ফোন করেন। এগিয়ে আসেন প্রতিবেশীরাও। রোজা, মেসিয়াকে বাঁচানো যায়নি। সানিয়ার বিষয়ও খুব বেশি আশাবাদী নন চিকিৎসকেরা।
বদ্ধ গাড়িতে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে মৃত্যুর ঘটনা আমেরিকায় নতুন নয়। তথ্য বলছে, ১৯৯৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে এ ভাবেই প্রাণ হারিয়েছেন ৫,১০০ মানুষ। তা-ও কেন এ বিষয়ে সতর্ক হয় না প্রশাসন?
সানিয়ার আরোগ্য চেয়ে মঙ্গলবার জোসেফ রিজিওনাল মেডিক্যাল সেন্টারে যান মেয়র ব্লানকো। তুষারপাত হলে নাগরিকদের কী কী করণীয় সেই তালিকায় বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যুর কোনও উল্লেখ না থাকার কথা তিনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন। বনিলার পরিবারের ঘটনা সামনে আসায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, তুষারঝড়ে সব মিলিয়ে আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজই পেনসিলভেনিয়ায় মারা গিয়েছেন বছর ছাপ্পান্নর আরও এক প্রৌঢ়। নাম ডেভিড পারত্তো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy