Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Russia Ukraine War

১৫% ইউক্রেন দেশে জুড়তে প্রস্তুতি মস্কোয়

সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনে দখল করা বেশ কিছু এলাকা রাশিয়ার হাত থেকে চলে যায়। ইউক্রেনের হামলার মুখে রীতিমতো ঘাঁটি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় রাশিয়ার সেনা।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
মস্কো শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫২
Share: Save:

ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাশিয়ায় সংযুক্ত করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে মস্কো। গত পরশু তারা ঘোষণা করেছে, ডনেৎস্ক, লুহানস্ক, জ়াপোরিজিয়া ও খেরসনের গণভোটে তাদের জয় হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ পশ্চিমের দেশগুলি এই ভোটকে ভুয়ো বললেও তা শুনতে নারাজ ক্রেমলিন। মস্কোর রেড স্কোয়ারে বিশালাকার ভিডিয়ো স্ক্রিন বসানো হয়েছে। বড় বড় বিলবোর্ড পড়েছে। তাতে লেখা: ‘‘ডনেৎস্ক, লুহানস্ক, জ়াপোরিজিয়া, খেরসন— রাশিয়া!’’

সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনে দখল করা বেশ কিছু এলাকা রাশিয়ার হাত থেকে চলে যায়। ইউক্রেনের হামলার মুখে রীতিমতো ঘাঁটি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় রাশিয়ার সেনা। এর পরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংরক্ষিত বাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী, সুস্থ, সবল, যুদ্ধে লড়তে সক্ষম মানুষকেও ইউক্রেনে যেতে হবে। পাশাপাশি ইউক্রেনের দখলে থাকা অঞ্চলগুলোতে রাতারাতি গণভোটের কথা ঘোষণা করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, এ ভাবে অন্য দেশে ঢুকে এলাকা দখল করে সেখানে ভোট করানো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। কিন্তু সে সব যে পুতিন শুনতে নারাজ, তা স্পষ্ট। তাঁর উদ্দেশ্য অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, কাল পার্লামেন্টে ওই চার এলাকাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাশিয়ায় সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করবেন পুতিন।

রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‘ফলাফল স্পষ্ট। রাশিয়ায়, ...ঘরে স্বাগত!’’ ‘গণভোটে’ বিপুল সমর্থন পেয়ে রাশিয়ার জয়ের পরে এ কথা লেখেন মেদভেদেভ।

এক দিকে যখন বলা হচ্ছে, ক্রাইমিয়ার কায়দাতেই রাশিয়া ইউক্রেনের ১৫ শতাংশ জমি ছিনিয়ে নিতে চাইছে, ঠিক তখনই মস্কোর দাবি ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়ার মতো এ বারেও তারা বিপুল সমর্থন পেয়েছে। এবং ক্রাইমিয়ার মতো একই ভাবে ওই অঞ্চলগুলি রাশিয়ায় ফিরে আসছে।

আমেরিকা-ইউরোপ জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই ভোট মানে না। রাষ্ট্রপুঞ্জও জানিয়েছে, তারা বিশ্ব মানচিত্রের এই ভাবে বদলকে স্বীকৃতি দেবে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি আজও গোটা বিশ্বের রাষ্ট্রনেতাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, তাঁরা যেন এই গণভোটকে স্বীকৃতি না দেন, রাশিয়ার দাবি না মানেন। গত কাল রাতের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘এত দিন ধরে আপনারা স্পষ্ট ভাবে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। তার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের অবস্থা বোঝার জন্যেও সকলকে ধন্যবাদ জানাই।’’

ইউক্রেনকে ফের অস্ত্র সাহায্য পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। ১১০ কোটি ডলারের অস্ত্র প্যাকেজ। একটি আমেরিকান সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, এই প্যাকেজে থাকবে ১৮টি ‘হাই মোবিলিটি আর্টেলারি রকেট সিস্টেম লঞ্চার’।

ইউরোপ মুখে ইউক্রেনকে সমর্থন জানালেও যাতে বেশি কিছু করতে না পারে, তার জন্য জ্বালানি-অস্ত্রে তাদের চাপে রাখছে রাশিয়া। ইউরোপের দেশগুলিতে বেশির ভাগ জ্বালানি আসে রাশিয়া থেকে। কিছু দেশ সম্পূর্ণ ভাবেই রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি ইউরোপের একাধিক দেশে জ্বালানি সরবরাহ স্বল্প সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিল তারা। কারণ হিসেবে জানিয়েছিল, পাইপলাইন থেকে গ্যাস লিক হচ্ছে। ফের সেই ঘটনা। সুইডিশ উপকূলরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে চতুর্থ লিক ধরা পড়েছে। রাশিয়া থেকে জার্মানি যায় এই লাইনটি। লাইনের দু’টি ছিদ্র হয়েছে সুইডেনের এলাকায়। বাকি দু’টি ছিদ্র ধরা পড়েছে ডেনমার্কের এলাকায়। সাম্প্রতিক কালে বারবার এই ঘটনায় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। মনে করা হচ্ছে, ইউরোপকে চাপে রাখতে এটিও রাশিয়ার ‘রণকৌশল’।

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War Vladimir Putin Russia Ukraine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy