এসসিও সম্মেলনের অন্তিম পর্বে এসে শীতলতা কাটল নরেন্দ্র মোদী ও ইমরান খানের মধ্যে। সূত্রের খবর, আজ বিশকেক-এ এসসিও সম্মেলনের লাউঞ্জে ‘সৌজন্য বিনিময়’ করেছেন ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
সৌজন্য বিনিময়ের পরেই দ্রুত খবর ছড়িয়ে যায় পাক সংবাদমাধ্যমে। পাক বিদেশ মন্ত্রক জানায়, এটি কোনও আনুষ্ঠানিক বৈঠক নয়। তবে দুই নেতার কথা হয়েছে। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ‘‘এটি এক প্রস্ত ঘরোয়া কথাবার্তা। সৌজন্য বিনিময়ও বটে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে জয়ের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। এটা ঠিকই যে, ভারতের একটি বড় রাজনৈতিক পরিবারকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জিতে এসেছেন উনি (মোদী)।’’
গাঁধী পরিবারের প্রসঙ্গ টেনে এই মন্তব্য করে পাক বিদেশমন্ত্রী আদতে মোদী প্রশাসনকে ইতিবাচক বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। লোকসভা ভোটের আগে ইমরান নিজেই বলেছিলেন, বিজেপির মতো দক্ষিণপন্থী দল দিল্লিতে ক্ষমতায় থাকলে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে সুবিধা হবে পাকিস্তানের, কারণ ‘অন্য’
দলটি হিন্দুদের প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত-পাক আলোচনা শুরু হলে ঘরোয়া রাজনীতিতে ইমরানের পক্ষেও তা স্বস্তিদায়ক হবে। পাক সেনাও সেটাই চায়। উপরন্তু সামনেই এফএটিএফ সম্মেলন। যেখানে সন্ত্রাস-যোগের অভিযোগ মাথায় নিয়ে ধূসর তালিকায় পাকিস্তান। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে নিজেদের প্রয়াসের ছবি তুলে ধরাটা তাই পাকিস্তানের কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতাও।
পাক বিদেশ মন্ত্রক এই কথা বললেও তুলনামূলক ভাবে অনেক ক্ষণ নিশ্চুপ থাকে নয়াদিল্লি। পরে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়, ‘‘অনেকে বলছেন, দুই নেতার মধ্যে নাকি বৈঠক হয়েছে। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে— কোনও বৈঠক হয়নি। যেটা হয়েছে, তা নেহাতই সৌজন্য বিনিময়। ফলে অযথা খবরকে বিকৃত না-করাই ভাল।’’
সাউথ ব্লকের এই বিবৃতিতেই স্পষ্ট যে, সাধারণ শুভেচ্ছা বিনিময়ের বিষয়টিও যাতে দেশে কোনও ভাবেই বেশি আলোচিত না হয়, তার চেষ্টা চলছে। কাল থেকেই একাধিক বার মুখোমুখি হন দুই নেতা। অনুষ্ঠানে একই সারিতে বসেছেন। কিন্তু বাক্যবিনিময় করতে দেখা যায়নি তাঁদের। গ্রুপ ছবিতেও দু’জনে দাঁড়িয়েছেন দুই প্রান্তে। সম্প্রতি ইমরান মোদীকে চিঠি লিখে কাশ্মীর-সহ সমস্ত বকেয়া বিষয় নিয়ে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মোদীর জয়ের পর ফোনও করেছিলেন। কিন্তু সর্বসমক্ষে মূলত মোদী এড়িয়ে গেলেন ইমরানকে।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, একই কক্ষে দীর্ঘ ক্ষণ থেকেও সামান্য সৌজন্য বিনিময় না-করাটা খুবই অস্বাভাবিক হয়ে উঠছিল। তাই মুখোমুখি হওয়াতে সেটুকু সেরেছেন মোদী। ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এর বেশি এগোননি। বস্তুত, সাউথ ব্লকের তরফেও ৮৭ জন ভারতীয় পুণ্যার্থীকে পাক ভিসা না-দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে আজ। ইসলামাবাদের পাল্টা দাবি, দু’শো জন শিখকে লাহৌর নিয়ে যেতে পাকিস্তানই ট্রেন পাঠিয়েছিল। ভিসাও দিয়েছিল। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই ট্রেনকে সীমান্ত পার হতে দেয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজেপি যুদ্ধ-জিগির তুলেছিল লোকসভা ভোটের ঠিক আগে। ফল ঘোষণার এক মাসের মধ্যেই তিনি যদি ইমরানের সঙ্গে ফোটোসেশন করতেন, ভুল বার্তা যেত। খুশি হত না সঙ্ঘ পরিবারও। তাই ‘ধরি মাছ না-ছুঁই পানি’ নীতি নিয়ে ‘নমো নমো’ করেই সৌজন্য সারলেন ‘নমো’!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy