প্রতীকী ছবি।
ক্রমেই চিন্তা বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র বিশেষ আপৎকালীন কমিটি আজ দ্বিতীয় বারের জন্য বৈঠকে বসেছিল। মাঙ্কিপক্সকে বিশ্ব-বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা হয় বৈঠকে।
কোভিডের ক্ষেত্রে গোটা পৃথিবীতে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। ধনী-দরিদ্র সব দেশেই মৃত্যুমিছিল। কিন্তু মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রে ছবিটা কিছুটা আলাদা। আফ্রিকা মহাদেশে ইতিমধ্যেই মহামারী ঘোষণা হয়েছে। জরুরী পরিস্থিতি হিসেবে দেখা হচ্ছে এই সংক্রমণকে। কিন্তু ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অন্য দেশগুলিতে মাঙ্কিপক্সের তুলনায় কম ক্ষতিকারক রূপটি দেখা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই সব জায়গায় পরিস্থিতি তেমন গুরুতর নয়।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অংশে মাঙ্কিপক্স কয়েক দশক ধরেই রয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় জংলি পশুদের থেকে মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটতে দেখা যায়। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অন্য দেশগুলিতে গত মে মাস থেকে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ দেখা গিয়েছে, মূলত সমকামী ও উভকামী পুরুষদের মধ্যে। স্পেন ও বেলজিয়ামের মতো ধনী দেশে এই রোগ ছড়িয়েছে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে। বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ, এই কারণেই হয়তো ধনী ও গরিব দেশগুলিতে অসুখের চরিত্রের মধ্যে তারতম্য রয়েছে।
গোটা বিশ্বে মাঙ্কিপক্স সংক্রমিতের সংখ্যা কমপক্ষে ১৫ হাজার। এর মধ্যে সবচেয়ে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি আফ্রিকার। কিন্তু অভিযোগ, বেশির ভাগ টিকা (কোটিখানেক) যাচ্ছে আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা ও অন্য ধনী দেশগুলিতে। আফ্রিকা একটি টিকাও পায়নি। অথচ সেখানেই মহামারী দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ৭০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ধনী দেশগুলিতে কিন্তু এখনও কোনও মৃত্যুর খবর নেই।
ব্রিটেনের ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের অধ্যাপক, তথা হু-র প্রাক্তন পরামর্শদাতা পল হান্টার বলেন, ‘‘আফ্রিকার যা অবস্থা, তার সঙ্গে ইউরোপ, আমেরিকার কোনও মিল নেই।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জও জানিয়েছে, আফ্রিকার বাইরে যা যা সংক্রমণ ঘটেছে, তার ৯৯ শতাংশ হয়েছে পুরুষদের। এরও ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সেই সব পুরুষ অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। তার পরেই সংক্রমণ ঘটেছে। তবে বিশেষজ্ঞেরা এ-ও জানাচ্ছেন, যৌন সম্পর্কই একমাত্র সূত্র নয়, কোনও মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি এলেও সংক্রমণ ঘটতে পারে।
কিন্তু যেহেতু বিষয়টিতে সমকামী সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য যোগ রয়েছে, পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হচ্ছে। পল বলেন, ‘‘সমকামীদের অনেকেই নিজেদের যৌন পরিচয় গোপনরাখতে চান। এঁদের অনেকে বিবাহিত। স্ত্রী আছেন, পরিবার আছে।তারাও কেউ ওই ব্যক্তির যৌন পরিচয় সম্পর্কে জানে না। ফলে অনেকেই রোগ চেপে যাচ্ছেন। রোগপরীক্ষা করাতে রাজি হচ্ছেন না। সংক্রমিতকে চিহ্নিত করা কঠিন হচ্ছে।’’ তা ছাড়া, এ সব ক্ষেত্রে শরীরে ঘা কম হচ্ছে। হলেও যৌনাঙ্গে। অনেকেই ঢেকে রাখছেন, কাউকে না জানালে বোঝাও যাচ্ছে না। ফলে অজান্তেই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
আফ্রিকার ছবি একেবারে ভিন্ন। সংক্রমিতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘা হচ্ছে। অনেকে বাড়ি থেকে বেরোনোর অবস্থায় থাকছেন না। রোগের ভয়াবহতা অনেক বেশি। ফলে লুকানোর উপায় নেই।কিন্তু সবেতেই দেখা গিয়েছে, বন্য পশুদের থেকে রোগীর দেহে অসুখ ছড়িয়েছে। আফ্রিকান স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, সীমিত সংখ্যক পরীক্ষা হয়েছে, তাই সমকামের বিষয়টি তাঁদের নজর এড়িয়ে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy