Meet Murlikant Petkar who won India’s first Para Olympic gold dgtl
Murlikant Petkar
Murlikant Petkar: শরীর ফুঁড়েছিল পাক সেনার গুলি, প্যারালিম্পিক্সে দেশকে প্রথম সোনা এনে দেন মুর্লিকান্ত
নিমেষে আকাশ ফুঁড়ে শত শত গুলি বর্ষণ হতে শুরু হয়েছিল তাঁর উপর। পাকিস্তানের ছোড়া একাধিক গুলি লেগেছিল তাঁর শরীরে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২১ ১৩:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
সাইরেন বেজে উঠতেই বুঝে গিয়েছিলেন বিপদ আসন্ন। নিজেকে বাঁচানোর সময়টুকুও পাননি। নিমেষে আকাশ ফুঁড়ে শত শত গুলি বর্ষণ হতে শুরু হয়েছিল তাঁর উপর। পাকিস্তানের ছোড়া একাধিক গুলি লেগেছিল তাঁর শরীরে।
০২১৪
সেই থেকেই ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের প্রভাব শরীরে পড়েছিল বটে, কিন্তু মনের জোরে তা এতটুকু প্রভাব ফেলতে পারেনি।
০৩১৪
ওই ঘটনার মাত্র সাত বছরের মধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন তিনি। বিশ্বদরবারে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন। তিনি মুর্লিকান্ত পেটকর। দেশের সোনাজয়ী প্রথম প্যারালিম্পিয়ান।
০৪১৪
১৯৭২ সালে জার্মানির হেডেলবার্গে গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিক্স অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তাতে ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে সোনা পেয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া জ্যাভলিন ছোড়া, তিরন্দাজি-সহ আরও একাধিক বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন।
০৫১৪
১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার তিন মাস পর মহারাষ্ট্রের পুণেতে জন্ম তাঁর। মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি ছোট থেকে খেলাধুলোতেও আগ্রহী ছিলেন তিনি। ছোটবেলায় কুস্তি খুব পছন্দের খেলা ছিল তাঁর। গ্রামের প্রধানের কুস্তিগীর ছেলেকে হারিয়ে খুব নামডাকও হয়েছিল এক সময়।
০৬১৪
তার পর ভারতীয় সেনার কর্পস অব ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারস (ইএমই)-তে ক্রাফ্টসম্যান হিসাবে যোগ দেন। সেখানেও বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি। খুব তাড়াতাড়ি সেনাবাহিনীতে জনপ্রিয় বক্সার হয়ে ওঠেন।
০৭১৪
১৯৬৪ সালে টোকিয়োয় আন্তর্জাতিক সার্ভিসেস স্পোর্টস মিট-এ বক্সিংয়ে ভারতীয় সেনার হয়ে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এর কিছু দিন পরে কাশ্মীরের সিয়ালকোট সেক্টরে বদলি হয়ে যান। ১৯৬৫ সালে তাঁর জীবন পুরোপুরি বদলে যায়।
০৮১৪
নিজের ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে সেনা ক্যাম্পাসের মধ্যেই পায়চারি করছিলেন মুর্লিকান্ত। হঠাৎই সাইরেন বেজে ওঠে। তিনি বুঝে গিয়েছিলেন বিপদ আসন্ন। ছুটে নিজের ক্যাম্পের দিকে যাওয়ার মধ্যেই লাগাতার গুলিবৃষ্টি শুরু হয়।
০৯১৪
একাধিক গুলি এসে লাগে তাঁর শরীরে। সেই সময়ই ভারতীয় সেনার একটি গাড়ি ধাক্কা মারে তাঁকে।
১০১৪
ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারিয়েছিলেন মুর্লিকান্ত। অনেক দিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও কিছুটা সময় লেগে যায়। তার পরও হাঁটাচলাতে সমস্যা থেকেই যায়।
১১১৪
নিজেকে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সাঁতার অনুশীলন করতে শুরু করেছিলেন তিনি। ভারতীয় সেনার দোর্দণ্ডপ্রতাপ বক্সার সেই থেকেই হয়ে উঠলেন সুদক্ষ সাঁতারু।
১২১৪
জীবনের নতুন লক্ষ্য পেয়ে যান মুর্লিকান্ত। সেনায় কর্মরত অবস্থায় তিনি টেবিল টেনিস, জ্যাভলিন, শটপট, ডিসকাস এবং তিরন্দাজিতে রাজ্যস্তরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এ বার তাঁর লক্ষ্য ছিল আরও উঁচুতে। আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ওই শরীরেই কঠোর পরিশ্রম করতে শুরু করলেন।
১৩১৪
১৯৭২ সালে প্যারালিম্পিক্স প্রতিযোগিতায় সোনা জিতে বিশ্বের দরবারে ভারতকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি।