ভেঙে পড়েছে বাড়ি। ছবি: রয়টার্স।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল চিলে। বুধবার স্থানীয় সময় রাত আটটা নাগাদ ৮.৩ তীব্রতার ওই ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে সূত্রে খবর, চিলের ইলাপেল শহর থেকে ৫৪ কিলোমিটার পশ্চিমে এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দশ লক্ষ মানুষকে।
চিলের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী হোর্হে বুর্হোস জানিয়েছেন, প্রথম কম্পন অনুভূত হওয়ার পর অন্তত বারো বার ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন অনুভূত হয়। এমনকী, সমুদ্রসৈকতে সুনামি সতর্কতাও জারি করে প্রশাসন। যদিও বৃহস্পতিবার ভোরের আগেই তা তুলে নেওয়া হয়। ভূমিকম্পে চিলের বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। ১৩৫,০০০টিরও বেশি পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন। ভূমিকম্পে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মধ্য চিলে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী সান্তিয়াগোও। ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে সমুদ্রের কাছাকাছি বেশ কিছু বাড়ি-ঘর এবং মাছ ধরার নৌকো।
চিলের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজনকে উঁচু এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘর-বাড়ি দুলতে দেখে রাস্তায় নেমে আসেন মানুষজন। টিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বড় বড় দোকানের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ভাঙা বোতল, ভাঙা কাচ। যেখানে-সেখানে পড়ে খাবারের টুকরো।
সান্তিয়াগোর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘প্রথমে হাল্কা কম্পন অনুভূত হয়। তার পর আস্তে আস্তে কম্পনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের সময় আবাসনের বারো তলায় ছিলেন তিনি। কম্পনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় তিনি ও তাঁর পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। নাভিদাদের বাসিন্দা মারিয়া অ্যাঞ্জেলিকার কথায়, ‘‘সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা। নাতি-নাতনিদের নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে এসেছি। এখন একটা পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছি। আশা করি, শীঘ্রই এই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠব।’’
ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন সান্তিয়াগোর বাসিন্দা বছর ছিয়াশির এক বৃদ্ধ। প্রাণ হারিয়েছেন বছর পঁয়ত্রিশ এবং বছর কুড়ির দু’জন মহিলা। এখনও পর্যন্ত বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। ভূমিকম্পে জখমও হয়েছেন সাত জন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চিলের ভূমিকম্পের রেশ পড়েছে আর্জেন্তিনার বুয়েনোস এয়ারেসেও। ভূমিকম্পের তীব্রতায় দুলে ওঠে সেখানকার বড় বড় আবাসন। ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিল যে সুদূর নিউজিল্যান্ডে সুনামির সতর্কবার্তা জারি করেছে সে দেশের প্রশাসন। নিউজিল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, সমুদ্রসৈকতের কাছে যেতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে স্থানীয়দের।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালেও ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল চিলে। সে সময় কম্পনের মাত্রা ছিল ৮.৮। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৫২৫ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy