প্রতীকী ছবি
আমেরিকায় ক্রমশ দাপট বাড়ছে মারণ ভাইরাসের। সদ্যসমাপ্ত প্রেসিডেন্ট ভোটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যা অন্যতম হাতিয়ার ছিল আগামী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। এ বার সেই ভাইরাসে কাবু প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিক্রেট সার্ভিসের ১৩০ জনেরও বেশি কর্মী। করোনা-আক্রান্তদের সান্নিধ্যে আসায় ওই গোয়েন্দারা হয় নিজেরাই সংক্রমিত, নয়তো সংক্রমণের আশঙ্কায় কোয়রান্টিনে রয়েছেন। মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০ সিক্রেট সার্ভিস কর্মী কোয়রান্টিনে থেকেছেন।
এ ক্ষেত্রেও আঙুল উঠছে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দিকেই। তাঁর নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন প্রদেশে সফরের সময়েই ওই সিক্রেট সার্ভিসের কর্মীরা নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছিলেন। সেখানে উপস্থিত বহু আধিকারিকই নিয়মের তোয়াক্কা না-করে ট্রাম্পের দেখানো পথেই মাস্ক ছাড়া উপস্থিত হয়েছিলেন।
গত তিন সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প যে সমস্ত অনুষ্ঠানের মুখ্য আয়োজক ছিলেন, সেখানেও অধিকাংশই মাস্কবিহীন অবস্থায় ছিলেন। ৩ নভেম্বর নির্বাচনের দিন নৈশভোজের অনুষ্ঠানেও সেই বেপরোয়া মনোভাব দেখা গিয়েছিল ট্রাম্প ঘনিষ্ঠদের। এমনকি চিফ অব স্টাফ মার্ক মেডোসও ছিলেন সেই তালিকায়। পরে তাঁর শরীরেও ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। অনুমান করা হচ্ছে, তাঁদের মাধ্যমেই নিরাপত্তাকর্মীরা সংক্রমিত হয়েছেন। সংক্রমিত হয়েছেন, ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ কোরি লেওয়ানডস্কি ও ডেভিড বসি।
আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অন্তত ৩০ জন গোয়েন্দা সংক্রমিত হয়েছেন। আরও ৬০ জনকে কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংক্রমণের প্রতিটি ঘটনাকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে প্রশাসন। তবে গোয়েন্দাদের সংক্রমণ নিয়ে প্রশ্নের ক্ষেত্রে অবশ্য সিক্রেট সার্ভিসের মুখপাত্র জুলি ম্যাকমারের দিকেই বল ঠেলেছেন তিনি। যদিও জুলি জানিয়েছেন, গোপনীয়তা বজায় রাখতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আনা সম্ভব নয়। তাঁদের কাছে কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাই অগ্রাধিকার।
এ দিকে উত্তরোত্তর সংক্রমণ বৃদ্ধির পরে আমেরিকা লকডাউনের পথে হাঁটবে কি না, সেই নিয়ে জল্পনা চলছিল। ভাবী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত শীর্ষ উপদেষ্টা শুক্রবার জানিয়েছেন, আপাতত দেশ জুড়ে লকডাউনের কোনও পরিকল্পনা নেই। কারণ, ইতিমধ্যেই দেশের তিনটি প্রদেশ যৌথ ভাবে রাস্তায় বেরোনোর ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে।
সামনেই ছুটির মরসুম। বাসিন্দারা যদি বেপরোয়া ভাবে বিভিন্ন জায়গায় সফর করতে যান, সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। তার প্রেক্ষিতেই ক্যালিফর্নিয়া, ওরেগন, ওয়াশিংটন প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের জানানো হয়েছে, খুব প্রয়োজন না-হলে প্রদেশের বাইরে না-যাওয়াই বাঞ্ছনীয়। বাইরে থেকে ওই তিনটি প্রদেশে কেউ প্রবেশ করলে তাঁকে ১৪ দিনের জন্য নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি ওরেগনের গভর্নর কেট ব্রাউন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ছ’জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। শীঘ্রই এই নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে জানান তিনি। নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়েমো জানিয়েছেন, অতিমারি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সপ্তাহান্তেই উত্তর-পূর্বের ছ’টি রাজ্যের গভর্নরেরা বৈঠকে বসতে চলেছেন।
বাইডেনের উপদেষ্টা দলের সদস্য তথা চিকিৎসক বিবেক মূর্তি জানিয়েছেন, দেশ জুড়ে লকডাউনের পথে হাঁটা সম্ভব নয়। তাই অঞ্চলভিত্তিক বিধিনিষেধ কার্যকরের উপরেই জোর দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy