Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Agitation in Bangladesh

অশান্ত বাংলাদেশ, কোটা সংস্কার আন্দোলনে হিংসা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে নিহত অন্তত ছ’জন

২০১৮-য় কোটা সংস্কার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্দেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন।

আন্দোলন ঘিরে ঢাকায় সংঘর্ষ।

আন্দোলন ঘিরে ঢাকায় সংঘর্ষ। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ২২:২৩
Share: Save:

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-যুব আন্দোলন ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা-সহ সে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। আন্দোলনকারীদের উপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের ছাত্রশাখাও হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ।

বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, চট্টগ্রামে নিহত হয়েছেন তিন জন। রাজধানী ঢাকায় দু’জন এবং রংপুরে এক জন। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় ছাত্র-যুব মিছিলে গুলি চালানো হয় বলেও অভিযোগ। সেখানে নিহত হয়েছেন বিরোধী দল বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের চট্টগ্রাম শাখার সম্পাদক মহম্মদ ওয়াসিম।

অন্য দিকে, রাজধানীর ঢাকা কলেজ এবং সায়েন্স ল্যাব এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলিগ ও ছাত্রলিগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে দুই আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। এলাকার ভারপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৮-তেও সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ৫৬ শতাংশ সংরক্ষিত এবং ৪৪ শতাংশ সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। এই ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন অনগ্রসর জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল। ২০১৮-য় কোটা-বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্দেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। তখনকার মতো আন্দোলনে ইতি টানেন ছাত্ররা।

কিন্তু সাত জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন ২০১৮-র সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশনামার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১-এ হাই কোর্টে যান। গত ৫ জুন হাই কোর্ট রায় দেয়, হাসিনা সরকারের নির্দেশ অবৈধ। নির্দেশনামা বাতিলের অর্থ ফের আগের মতো সংরক্ষণ ফিরে আসা। তার প্রতিবাদেই ফের আন্দোলনে নামেন ছাত্ররা। তাঁরা দাবি করেন, স্থায়ী ভাবে সরকারি নিয়োগ থেকে কোটা সংস্কার করতে হবে।

ইতিমধ্যে হাসিনা সরকার হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গত ১০ জুলাই গোটা বিষয়টির উপরে এক মাসের স্থগিতাদেশ দিয়ে বলেছে, হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার পরে তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে শীর্ষ আদালত। পরবর্তী শুনানি হবে ৭ অগস্ট।

হাই কোর্টের রায়-সহ গোটা বিষয়টিতে শীর্ষ আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ায় অর্থ, ২০১৮-এ সরকারের নির্দেশ বহাল রইল। অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন-সহ তিন ধরনের সংরক্ষণ সরকারি চাকরিতে রাইল না। কিন্তু সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এখন কোটা সংস্কারের দাবি তুলে নতুন করে আন্দোলন চালাচ্ছে। এর নেপথ্যে কট্টরপন্থী দল জামাত-ই-ইসলামির মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

(এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল বাংলাদেশে ‘সংরক্ষণ বিরোধী’ আন্দোলন হচ্ছে। আদতে বাংলাদেশে এই আন্দোলন হচ্ছে কোটা সংস্কারের দাবিতে। আমরা সেই ভ্রম সংশোধন করেছি। অনিচ্ছাকৃত ওই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Reservation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy