মসজিদে বিস্ফোরণের পরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে চেকপয়েন্টগুলোয়। রবিবার কাবুলে। রয়টার্স
তালিবানের অন্যতম মুখপাত্র জ়বিউল্লা মুজাহিদের সদ্য প্রয়াত মায়ের জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল। কাবুলের সেই মসজিদ চত্বরই আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আজ দুপুরে। বিস্ফোরণের পর পরই কাবুলের অন্যতম বড় ওই ইদগায় প্রবেশের রাস্তায় শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় তখন। এই হামলায় অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। আহতের সংখ্যা অন্তত চার।
বিস্ফোরণের পরে জ়বিউল্লা নিজেই টুইট করে জানান এই হামলায় অনেক সাধারণ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই নিহত ও আহতদের আসল সংখ্যাটা ঠিক কত, রাত পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়। একই ভাবে স্পষ্ট নয় এই হামলা চালাল কারা। গত কয়েক মাসে কাবুলে এই ধরনের হামলার সংখ্যা কমে এসেছিল। কিন্তু তালিবানের কাবুল দখলের পর থেকেই আফগান রাজধানী আইএস জঙ্গিদের হামলার অন্যতম নিশানা হয়ে উঠেছে।
তালিবানের সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের দ্বন্দ্বে আগেও বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষত আফগানিস্তানের পূর্বে নানগরহারে আইএসের উপস্থিতি চোখে পরার মতো। সেখানকার প্রাদেশিক রাজধানী জালালাবাদে মাঝে মধ্যেই হামলা চালায় আইএস। গত শুক্রবার কাবুলের উত্তরে পারওয়ান প্রদেশে আইএস জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তালিবান। তালিবানের কিছু যোদ্ধা আইএসের বোমা হামলায় আহত হওয়ার পরেই এই অভিযান চালানো হয়েছে ।
আফগানিস্তানের মাটিতে নিজেদের জায়গা পোক্ত করতে অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না তালিবান। আজই কাবুলের শহরতলি কোহদামানে তালিবানের সমর্থনে একটি সভায় যোগ দিতে দেখা গেল কয়েক হাজার সাধারণ আফগানকে। কোনও মহিলাকে অবশ্য এই সভায় দেখা যায়নি।
সভায় অনেকেই এসেছিলেন হাতে বানানো পতাকা নিয়ে। কারও কারও মাথায় লাগানো ছিল তালিবানের প্রতীক দেওয়া ফেট্টিও। সভা শুরুর আগে রকেট লঞ্চার এবং অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র হাতে প্যারেড করতে দেখা যায় তালিবান যোদ্ধাদের। সাউন্ড বক্সে জোরে চালানো হয় গানও। স্থানীয় ভাষায় যার বক্তব্য, ‘আমেরিকাকে হারানো অসম্ভব অসম্ভব। কিন্তু সম্ভব’।
সমালোচকদের অনেকেরই বক্তব্য, গোটা বিশ্বকে দেখাতে ভয় দেখিয়ে সমর্থক জোগানোর চেষ্টা করছে তালিবান। কয়েক সপ্তাহ আগে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা পোশাক পরে যে মেয়েরা তালিবানকে সমর্থন জানিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। অনেকেরই বক্তব্য, পুরুষরাই বোরখা পরে ওই সভায় হাজির হয়েছিলেন। খুব সম্প্রতি আগাম অনুমতি ছাড়া সরকার-বিরোধী মিছিলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দেশ জুড়ে। গত সপ্তাহেও কাবুলে মহিলাদের একটি বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে তালিবান যোদ্ধাদের। ফলে আজকের সভা কতটা স্বতঃস্ফূর্ত সে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
জালালাবাদ শহরে আবার গত কাল বন্দুকবাজদের হামলায় এক সাংবাদিক-সহ চার জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দু’জন তালিবান যোদ্ধাও রয়েছেন। তাঁরা সকলেই একটি অটোতে ছিলেন। আচমকাই কয়েক জন এসে তাঁদের উপরে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন। নিহত সাংবাদিক সইদ মারুফ সাদাতের ছেলেও এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy