Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
palestine

প্যালেস্তাইনের পাশে মালালা ও ইমরান, সংঘর্ষ অব্যাহত

ইজ়রায়েল আর প্যালেস্তাইনের সংঘর্ষ থামার নামগন্ধ নেই। উল্টে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হচ্ছে।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

চার দিন হয়ে গেল। ইজ়রায়েল আর প্যালেস্তাইনের সংঘর্ষ থামার নামগন্ধ নেই। উল্টে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, বিষয়টি এ বার পুরোদস্তুর যুদ্ধের দিকেই এগোচ্ছে। অন্য দিকে ইজ়রায়েলের বিভিন্ন শহরে বুধবার রাত থেকে আরবি জনগোষ্ঠী ও ইহুদিদের পুরনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন করে মাথা চাড়া দিয়েছে। ঘরে-বাইরে এই জোড়া ফলা সামলাতে গিয়ে বেজায় চাপের মুখে পড়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।

বৃহস্পতিবার গাজ়ার দিক থেকে উড়ে আসা রকেট হামলায় ইজ়রায়েলের জাতীয় গ্যাস সরবরাহকারী পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে। বহু দূর পর্যন্ত তার আঁচ ছড়িয়ে পড়ে। জেরুসালেমের বাসিন্দা স্টাভ গিভন ফোনে আনন্দবাজারকে জানালেন, মাঝে-মধ্যে দু’একটা রকেট ছুটে আসা নতুন নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে এত বড় হামলা দেখেননি তাঁরা। তিনি বললেন, ‘‘সোমবার থেকে প্রায় সারা দিনই থেকে থেকে বেজে উঠেছে সতর্কতা সাইরেন। মাথার উপর চক্কর কাটছে যুদ্ধবিমান। বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলছে প্রশাসন। বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু নিশ্চিন্তি কোথায়? কখন কোন বাড়িতে রকেট আছড়ে পড়ে সেই ভয়েই দিন কাটছে।’’

শুধু জেরুসালেম নয়, আশকেলন, আশদদ-সহ একাধিক শহরকে নিশানা করে রকেট ছুঁড়ছে হামাস। ইজ়রায়েল সেনার হিসেবে, চার দিনে অন্তত ১৬০০ রকেট উড়ে এসেছে। তবে ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা গিয়েছে। স্বল্প পাল্লার রকেট হামলা আটকাতে এক দশক আগে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছিল ইজ়রায়েল সরকার। এই প্রযুক্তিতে রাডারের মাধ্যমে যে কোনও দিক থেকে উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করে তাকে ধ্বংস করে ফেলা যায়। তবে ঝাঁকে ধাঁকে ছুটে আসা রকেটের যে কয়েকটিকে আটকানো যায়নি, ধ্বংসলীলা চালিয়েছে সেগুলিই।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজ়া প্রশাসনের অবশ্য দাবি, সোমবার থেকে ৬০০ রকেট ছুঁড়েছে ইজ়রায়েলও। যার ফলে ৮৩ জন প্যালেস্তাইনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ১৭ জন শিশু। জখম অন্তত ৪৮৭ জন সাধারণ মানুষ। সেই অভিযোগ উড়িয়ে সেনার পাল্টা দাবি, নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই সন্ত্রাসবাদী। অন্তত ১০ জন প্রথম সারির হামাস নেতার মৃত্যু নিশ্চিত করেছে সেনা।

এ দিকে গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে দেশের অভ্যন্তরেও অশান্তি শুরু হয়েছে। কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে ধরপাকড় করেছে পুলিশ। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বার্তা দিয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানজ়। দু’দেশের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে বুধবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন নেতানিয়াহু। ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে বাইডেন জানান, আত্মরক্ষার্থে পাল্টা হামলা চালানোর অধিকার রয়েছে ইজ়রায়েলের। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দ্রুত প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা জানিয়েছেন আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

অন্য দিকে, ক্ষতিগ্রস্ত প্যালেস্তাইনিদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্যালেস্তাইনি বংশোদ্ভূত আমেরিকান সমাজতাত্ত্বিক নোয়াম চমস্কির একটি লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে টুইট করেছেন তিনি। প্যালেস্তাইনিদের উপরে নিপীড়ন বন্ধের আর্জি জানিয়েছেন নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইও। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘প্যালেস্তাইনি শিশুদের এই সময়ে স্কুলে থাকার কথা। ধ্বংসস্তূপে নয়।’’ দু’পারের উত্তেজনা কমাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছে চিন, নরওয়ে, তিউনিশিয়াও। এই পরিস্থিতিতে বুধবার জরুরি বৈঠক ডেকেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু আমেরিকার বিশেষ অবস্থানের কারণে কোনও সমাধানে আসা যায়নি। শান্তি প্রতিষ্ঠায় শুক্রবার ফের জরুরি বৈঠক ডেকেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ইজ়রায়েল ও প্যালেস্তাইন দু’তরফের প্রতিনিধিদের সেখানে থাকার কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

palestine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy