Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Leukemia Treatment

লিউকিমিয়া রোগী সুস্থ নতুন চিকিৎসায়, দাবি রিপোর্টে

২০২১ সালে অ্যালিসার ‘অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকিমিয়া’ (এএলএল) ধরা পড়ে। টি-কোষে গোলমাল। কোনও চিকিৎসাতেই তার কাজ দিচ্ছিল না।

স্বামী-স্ত্রী ক্যানসার আক্রান্ত। চলছে কেমোথেরাপি। তারই মধ্যে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মহিলা।

স্বামী-স্ত্রী ক্যানসার আক্রান্ত। চলছে কেমোথেরাপি। তারই মধ্যে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মহিলা। ছবি: ফেসবুক।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৩৭
Share: Save:

কেমোথেরাপি, বোনম্যারো (অস্থিমজ্জা) প্রতিস্থাপন— প্রচলিত কোনও চিকিৎসাই কাজ দিচ্ছিল না ক্যানসার-আক্রান্ত কিশোরীর। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, খুদে মেয়েটি খুব খারাপ ধরনের লিউকিমিয়ায় আক্রান্ত। কিন্তু তার পরেই ঘটে গেল এক অত্যাশ্চর্য ঘটনা। একটি পরীক্ষামূলক চিকিৎসায় অংশ নিয়ে প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ ১৩ বছরের অ্যালিসা।

২০২১ সালে অ্যালিসার ‘অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকিমিয়া’ (এএলএল) ধরা পড়ে। টি-কোষে গোলমাল। কোনও চিকিৎসাতেই তার কাজ দিচ্ছিল না। লন্ডনের ‘গ্রেট ওরমন্ড স্ট্রিট হসপিটাল ফর চিল্ড্রেন’-এর একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রথম অংশগ্রহণকারী হিসেবে যোগ দেয় সে। বিশেষজ্ঞেরা এক জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবকের দেহ থেকে রোগপ্রতিরোধকারী কোষ (যেমন টি কোষ) নিয়ে জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড ভাবে অ্যালিসার দেহে প্রতিস্থাপণ করেন। ২৮ দিনেই ফল চোখে পড়ে। এর আগে বোনম্যারো প্রতিস্থাপনও কাজ দিচ্ছিল না অ্যালিসার শরীরে। এ বারে সেটি সফল হয়। এই মুহূর্তে ছ’মাস কেটে গিয়েছে। সেন্ট্রাল ইংল্যান্ডের লেস্টারে নিজের বাড়িতে ভাল আছে কিশোরী।

অ্যালিসার হাসপাতাল জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক চিকিৎসা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা ছিল না। ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল কিশোরী। প্যালিয়েটিভ কেয়ারে রাখতে হত তাকে। সেই জায়গা থেকেই তার পরিবারকে ক্লিনিকাল ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ‘গ্রেট ওরমন্ড স্ট্রিট হসপিটাল ফর চিল্ড্রেন’-এর পরামর্শদাতা রবার্ট চিয়েসা বলেন, ‘‘অ্যালিসা যে ভাবে সুস্থ হয়ে উঠছে, তা রীতিমতো উল্লেখযোগ্য। তবে রোগীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে আরও পর্যবেক্ষণ দরকার। আরও কয়েক মাস গেলে পরিষ্কার করে বোঝা যাবে।’’

ছোটদের ক্যানসারে সবচেয়ে চেনা নাম অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকিমিয়া। এটি মানুষের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দেয়। বি-কোষ ও টি-কোষ আক্রান্ত হয়। এই কোষ দু’টি ভাইরাস-ব্যাক্টিরিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। ‘গ্রেট ওরমন্ড স্ট্রিট হসপিটাল ফর চিল্ড্রেন’ জানিয়েছে, অ্যালিসা প্রথম রোগী, যার শরীরে জিনগত ভাবে পরিবর্তিত টি-কোষ প্রতিস্থাপণ করা হয়েছিল। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং এই হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে ২০১৫ সালে প্রথম জানা যায়, এই প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু তার পরেও কিছু প্রশ্ন থেকে গিয়েছিল। এ বারে অ্যালিসার সুস্থ হওয়ার ঘটনায় আরও এক ধাপ এগোল চিকিৎসা-বিজ্ঞান। ওই হাসপাতালের ইমিউনোলজিস্ট ওয়াসিম কাসিম বলেন, ‘‘এই ঘটনা এক দারুণ বিজ্ঞান-প্রদর্শন। বিশেষজ্ঞ দল ও সঠির পরিকাঠামোর সাহায্যে কী ভাবে গবেষণাগারে তৈরি প্রযুক্তি হাসপাতালে রোগীর দেহে কাজ দিতে পারে, তা বোঝা গেল। এ পর্যন্ত চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যতম আধুনিক সেল ইঞ্জিনিয়ারিং।’’

ছোট্ট অ্যালিসা জানিয়েছে, শুধু তার নিজের জন্য নয়, তার মতো অসুস্থ অন্য বাচ্চাদের জন্যেও সে ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিল। অ্যালিসার মা কিয়োনারও আশা, একই পদ্ধতিতে আরও অনেক লিউকিমিয়া আক্রান্ত শিশু সুস্থ হয়ে উঠবে। এই চিকিৎসা পদ্ধতির বিষয়ে লেখা গবেষণাপত্রটি ‘আমেরিকান সোসাইটি অব হেমাটোলজি’-র বার্ষিক সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

leukemia Treatment Fight for survival London
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy