মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে চলছে কেনাকাটা। ছবি রয়টার্স।
তখন মাঝদুপুর। শনিবারের ব্যস্ত বেইরুট শহরের একটি হাসপাতাল-করিডরে একসঙ্গে নিভে গেল সব কটা বাতি। হাসপাতালে একসঙ্গে কত রকমের বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি চলে। রোগীদের অক্সিজেন, অপারেশন থিয়েটার-সহ কত কী! জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি আপাতত সামাল দেওয়া গেলেও বিদ্যুৎ আসার অপেক্ষা যে কত ক্ষণের তা জানা নেই।
শোনা গেল, বড়সড় বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছে। শুধু রাজধানী বেইরুটে নয়। লেবানন দেশটাই শনিবার দুপুর থেকে লোডশেডিংয়ে স্তব্ধ। সরকারি সূত্রের খবর, জ্বালানির অভাবে বসে গিয়েছে দেশের অন্যতম দুই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র অল-জ়াহরানি এবং ডের আমার। ফলে মানুষের ভরসা জেনারেটরের মতো আপৎকালীন ব্যবস্থায়। কিন্তু জ্বালানি-সঙ্কটে ভুগতে থাকা দেশটায় ডি়জেলও যে সহজলভ্য নয়। আপাতত বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন গোটা দেশ। শনিবার বিকেল থেকে গাড়িতে জ্বালানি ভরতে গ্যাস স্টেশনগুলিতে দীর্ঘ লাইন পড়েছে। সকলের প্রশ্ন, আর কত ক্ষণ?
সরকারি এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা ফের চালু হওয়ার কোনও আশা দেখছি না। তার বেশি সময়ও লাগতে পারে।’’ সাধারণ মানুষ তো বটেই, বিদ্যুৎ-সঙ্কটে চরম মুশকিলে পড়েছে হাসপাতাল, দমকলের মতো জরুরি পরিষেবা এবং তার পাশাপাশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিও। আপৎকালীন ভাবে সেনা বাহিনীর জন্য মজুত জ্বালানি ব্যবহার করে পরিষেবা চালু করার কথা ভাবছে প্রশাসন।
লেবাননে আর্থিক সঙ্কট এখন চরমে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৮৫০ সালের পরে দেশে এত খারাপ সময় আসেনি। আন্তর্জাতিক বাজারে লেবাননের মুদ্রার দাম প্রায় ৯০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্কে আটকে রয়েছে মানুষের সঞ্চয়। লেবাননের বাণিজ্য ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়েছে।
এর জন্য দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকেই দায়ী করছে দেশবাসী। তার উপরে গৃহযুদ্ধ তো রয়েইছে। জ্বালানি সঙ্কটে বহু দিন ধরে ধুঁকছে দেশ। এ বছর অগস্টে ইরানের হেজ়বুল্লা নেতা হাসান নাসরাল্লা জানান, লেবাননে ইরান জ্বালানি পাঠাবে। সেই মতো সেপ্টেম্বরে সিরিয়া হয়ে তেলের ট্যাঙ্কার পৌঁছয় লেবাননে। কিন্তু অভিযোগ, জ্বালানি পাঠানোর সময়ে ইরান আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তি ভেঙেছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাটির মতে যা দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। সরকার একে সমর্থন করতে পারে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং দেশে বিদ্যুৎ পরিষেবার হাল ফেরাতে মিশর, সিরিয়া জর্ডনের সঙ্গে কথা বলছে লেবানন সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy