প্রতীকী ছবি।
উষ্ণায়নের জেরে আড়েবহরে ক্রমেই ছোট হচ্ছে উত্তর মেরুর বরফের চাদর। এ নিয়ে বারবার সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এ বারে আর্কটিক বা উত্তর মেরুর প্রাচীনতম ও সবচেয়ে পুরু বরফের চাদরেও এক ‘প্রকাণ্ড গর্ত’ চোখে পড়ল জলবায়ু বিজ্ঞানীদের। তাঁদের অনুমান, ২০২০ সালের মে মাসে ওই ফাটল তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ‘‘এই অংশটিই সবচেয়ে স্থিতিশীল বলে এত দিন জানতাম। এখানেও ভাঙন ধরেছে। ভয় হচ্ছে, এ বার কি এখানেও বরফ গলতে শুরু করবে!’’
উত্তর মেরুর এই অংশকে পৃথিবীর ‘লাস্ট আইস’ বলা হয়। অর্থাৎ কি না শেষ অক্ষত বরফ-চাদর। কিন্তু ‘শেষ বরফ’-এও ভাঙন স্পষ্ট। বরফের চাদের ফাটল ধরে একটি ফাঁকা অংশ তৈরি হয়েছে। তার নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে জল। এই ধরনের ফাটলকে ‘পলিনিয়া’ বলে। ২০২০-র মে মাসে ‘লাস্ট আইস’ এলাকার অন্তর্ভুক্ত কানাডার এলসমেয়ার আইল্যান্ডে বরফের মাঝে পলিনিয়া চিহ্নিত হয়। দু’সপ্তাহ ধরে ও ভাবে বরফের মাঝে গর্ত হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের অনুমান, উত্তর মেরুর জোরদার অ্যান্টিসাইক্লোনিক হাওয়ার জেরে পলিনিয়াটি তৈরি হয়েছিল। পরে সেটি বুজে গেলেও মেরুর ওই অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই প্রকৃতি বিজ্ঞানীদের। অগস্ট মাসে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘জিয়োফিজ়িক্যাল রিসার্চ লেটারস’-এ। সেখানে বিশেষজ্ঞেরা লিখেছেন, ১৯৮৮ সালে থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এমন বেশ কিছু পলিনিয়া তৈরির খবর তাঁদের কাছে রয়েছে। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে সেই ছবি।
এই গবেষণার যুক্ত প্রধান বিজ্ঞানী কেন্ট মুর জানাচ্ছেন, ওই অংশে সমুদ্রের উপরে বরফের চাদর প্রায় ১৩ ফুট পুরু। অন্তত ৫ বছরের জমা বরফ। কিন্তু এই অংশও যে বিপন্ন হয়ে উঠছে, তা স্পষ্ট।
২০২১ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গ্রিনল্যান্ডে প্রতি বছর আরও দ্রুততার সঙ্গে বরফ গলে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এ ভাবে চললে, এই শতকের শেষে ‘লাস্ট আইস’ সম্পূর্ণই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আর সেই সঙ্গে, মেরু ভল্লুকের
মতো বরফ-রাজ্যের বাসিন্দারাও হারিয়ে যাবে চিরতরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy