প্রতীকী ছবি।
রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়া ‘শিল্পীর’ প্রাণ যায়!
কোথায় রাশিয়া, কোথায় গুজরাত। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ঝাপটায় ক্রমশই প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠছে ভারতের হিরে শিল্পীদের। বিশেষত গুজরাতের সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের রাজকোট, আমরেলি, জুনাগড়, ভাবনগরের মতো জেলাগুলির হিরে শিল্পে এই যুদ্ধের বড়সড় প্রভাব পড়েছে। হিরে কাটা ও পালিশের সঙ্গে যুক্ত এই অঞ্চলের বহু মানুষ। স্থানীয় ভাবে ‘পতলি’ নামে পরিচিত তাঁরা। এই শিল্পের জন্য ছোট আকারের হিরের একটা বড় অংশ আমদানি করা হত রাশিয়া থেকে। কিন্তু যুদ্ধ বাধার পরেই সেই হিরের আমদানিতে টান পড়েছে।
ফলে ব্যবসাতেও পড়তে শুরু করেছে তার পরোক্ষ প্রভাব। রাশিয়া থেকে ছোট আকারের হিরে আমদানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের এখন আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলি-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে না-কাটা হিরে আমদানি করতে হচ্ছে। স্বভাবতই বাড়ছে খরচ, কমছে লাভ। আমরেলি জেলার এক হিরে ব্যবসায়ী জানান, রাশিয়ার বদলে তাঁরা আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশ থেকে ছোট হিরে আমদানি করতে বাধ্য হওয়ায় খরচ বেড়ে গিয়েছে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ।
লাভ ও খরচের ভারসাম্য রাখতে শিল্পী ও কারিগরদের কাজের সময় কমাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দৈনিক আট ঘণ্টায় জায়গায় ছ’ঘণ্টা কাজ করছেন শিল্পীরা। তা-ও সপ্তাহান্তে জোর করে ছুটি দেওয়া হচ্ছে দু’দিন। গুজরাতের রত্ন ও গয়না রফতানি পরিষদের মুখ্য আধিকারিক জানান, রাজ্যে হিরে শিল্পে নিযুক্ত রয়েছেন কমপক্ষে ১৫ লক্ষ মানুষ। কাজের সময় কমে যাওয়ায় তাঁদের আয় কম হচ্ছে। শিল্পীদের ৫০ শতাংশই ছোট হিরে নিয়ে কাজ করেন। যুদ্ধের আগে এই ছোট হিরের অন্তত ৩০ শতাংশ রুশ সংস্থা থেকে আমদানি করা হত। কিন্তু এখন তা প্রায় বন্ধের মুখে। বড় আকারের হিরে কাটা ও পালিশ করা হয় সুরাতে। যুদ্ধের ফলে প্রভাব পড়েছে তাতেও।
গুজরাতে কাটা এবং পালিশ হওয়া হিরের অন্তত ৭০ শতাংশ রফতানি হয় আমেরিকায়। অথচ যুদ্ধের কারণে রুশ জিনিসপত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের একাধিক দেশ। ফলে রফতানি করে যে খামতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে, উপায় নেই তারও। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলছেন, আমেরিকার বেশ কয়েকটি সংস্থা সরাসরি তাঁদের জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া থেকে ছোট হিরে এনে পালিশ করা ও কাটা হলে তা তারা নেবে না।
সতত পরিবর্তনশীল রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে তাকিয়ে তাই হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন গুজরাতের এই শিল্পীরা। হিরের সঙ্গে ঘর করেও যুদ্ধের পৃথিবীতে তাঁরা ডুবে যাচ্ছেন অভাবের কালো ধোঁয়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy