আবার ইমরানকে স্বস্তি দিল আদালত। ফাইল চিত্র।
তোষাখানা দুর্নীতি মামলা এবং এক মহিলা বিচারক ও দুই পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তাঁর জামান পার্কের বাড়ি ঘিরে ছিল লাহোর পুলিশ এবং পাক রেঞ্জার্স বাহিনী। বুধবার দুপুরে লাহোরের একটি আদালত ইমরানের বিরুদ্ধে জারি করা জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরে সরে গেল তারা।
পাক পঞ্জাবের সরকার ইমরানকে গ্রেফতারের তৎপরতায় ইতি টানতেই জামান পার্কে কয়েক হাজার তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সমর্থকের জমায়েতে শুরু হয়েছে উৎসব।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত দফায় দফায় ইমরানের এই অনুগামীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে প্রতিরোধ হটিয়ে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির দরজায় পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ ও রেঞ্জার্সের যৌথবাহিনী। কিন্তু বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গ্রেফতার করেনি। বস্তুত, ইমরানের গ্রেফতারির আশঙ্কায় সোমবার থেকেই তাঁর বাড়ি ঘিরে অবস্থানে বসেছিলেন কয়েক হাজার পিটিআই কর্মী-সমর্থক। মঙ্গলের সন্ধ্যায় থেকেই তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠি, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। রাতে টুইটারে ভিডিয়ো-বার্তায় ইমরান তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘জাতির উদ্দেশে আমার বার্তা, প্রকৃত স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, লড়াই চালিয়ে যান। পুলিশ ভাবছে আমাকে জেলে পাঠালে সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। কিন্তু তা হবে না।’’
সেই সঙ্গে অনুগামীদের উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘‘আমার মৃত্যু হলেও এ লড়াই আপনারা থামাবেন না। একনায়কতন্ত্রকে উৎখাত না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’ ইমরানের টুইটার বার্তার পরে লাহোরের পাশাপাশি পাকিস্তানের অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ শুরু করেন পিটিআই সমর্থকেরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে নতুন করে অশান্তির খবর আসতে শুরু করে। বুধবার লাহোর আদালতের রায়ের পরে ইসলামাবাদ, করাচি, কোয়েটা, পেশোয়ারেও ইমরান অনুগামীরা উৎসবে মাতেন।
প্রসঙ্গত, এক মহিলা বিচারক এবং দুই পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়কের বিরুদ্ধে সোমবার জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইসলামাবাদ জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক রানা মুজাহিদ রহিম। তিনি ইমরানকে গ্রেফতারের সময়সীমা দিয়েছিলেন ২১ মার্চ।
অন্য দিকে, তোষাখানা মামলার শুনানিতে হাজির না হওয়ায় গত মঙ্গলবারই অতিরিক্ত দায়রা বিচারক জাফর ইকবাল ইমরানের বিরুদ্ধে পৃথক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। তাতে ১৮ মার্চের মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পুলিশকে। জোড়া গ্রেফতারি পরোয়ানার জেরেই তাঁকে গ্রেফতারির এই অভিযান।
গত বছর ইসলামাবাদে পুলিশি হেফাজতে এক পিটিআই নেতার বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে ইমরান দাবি করেছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক জেবা চৌধুরী, পুলিশের আইজি আকবর নাসির খান এবং স্থানীয় ডিআইজির বিরুদ্ধে মামলা করবে তাঁর দল। সেই মন্তব্যের জেরে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। কিন্তু শুনানিতে তিনি হাজির হননি। এর পর প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়কের বিরুদ্ধে সোমবার জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইসলামাবাদ জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক রহিম। এর আগে গত ৫ মার্চ তোষাখানা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও ইমরানকে ধরতে তাঁর লাহোরের বাড়িতে পুলিশি অভিযান হয়েছিল। কিন্তু তাঁর নাগাল পাওয়া যায়নি। পরে হাই কোর্ট তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy