—ফাইল চিত্র।
তুরস্ক সেনার আগ্রাসন রুখতে এ বার উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার স্বশাসিত কুর্দ প্রশাসন চুক্তি করল প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদের সরকারের সঙ্গে। আর সেই চুক্তির পরে আজই তুরস্কের সীমান্ত-ঘেঁষা সিরিয়ার বেশ কয়েকটি শহরে মোতায়েন করা হয়েছে সিরীয় সেনা। গত আট বছরের সিরীয় গৃহযুদ্ধে যা অন্যতম ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে কুর্দ প্রশাসনের প্রধান আজ জানিয়েছেন, তুরস্ক বাহিনীর অভিযান ঠেকাতে তাঁদের কাছে দু’টো রাস্তা খোলা ছিল। যার মধ্যে একটি হল তুরস্ক সরকারের সঙ্গে আপস করা। অন্যটি লাখো লাখো মানুষকে কার্যত গণহত্যার মুখে দাঁড় করিয়ে দেওয়া। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আমাদের মানুষের জীবনকেই বেছে নিলাম।’’
তবে কুর্দিশ প্রশাসনের প্রধান আজ এটাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, পরিস্থিতি সামলাতে আপাতত সামরিক সাহায্য চাইলেও আসাদ সরকারের সঙ্গে প্রশাসনিক কোনও সম্পর্ক তাঁদের থাকবে না। কুর্দরা এত দিন যে ভাবে স্বশাসনের আওতায় ছিলেন, এখনও সেই প্রক্রিয়াই বহাল থাকবে।
কুর্দ প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পরেই রাস আল-আইনে আসাদ বাহিনীর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গত ছ’দিনের যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই শহরটিই। ইতিমধ্যেই সেখানকার হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া। আজ তাল তামর শহরে সিরীয় সেনা পৌঁছতেই সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের উল্লাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এই দুই শহরের পাশাপাশি মানবিজ, কোবানে,
তাবকা, আইন ইসা, রাকার মতো সীমান্তবর্তী শহরগুলিতেও তুরস্ক সেনার অভিযান রুখতে পৌঁছে গিয়েছে সিরীয় সেনার একাংশ।
গত সপ্তাহে সিরিয়া থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। আর তার পর পরেই কুর্দিশ বাহিনী এসডিএফ (সিরায়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স)-এর বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্ডোয়ান। কার্যত ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তই এর্ডোয়ানের রাস্তা পরিষ্কার করে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। গত কালই মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব এক হাজার সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করেন। এর্ডোয়ান আজ সেই সিদ্ধান্তকে সদর্থক বলে স্বাগত জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে কুর্দ প্রশাসন জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে প্রায় আটশোরও বেশি বিদেশি মহিলা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে কুর্দ প্রশাসনের একটি শিবির ছেড়ে পালিয়েছেন। এঁরা প্রত্যেকই আইএস জঙ্গিদের আত্মীয়া বলে দাবি করেছে তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবশ্য দাবি, ওই এলাকায় যাতে মার্কিন সেনা ফিরে যায়, হয়তো সে জন্যই জঙ্গি ও তাঁদের আত্মীয় পরিজনদের পালাতে সাহায্য করছে কুর্দ প্রশাসন। এ
দিকে, আজই মার্কিন প্রশাসনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সিরিয়া থেকে আচমকা সেনা প্রত্যাহারের জন্য প্রায় ষাট জন ‘হাই-প্রোফাইল’ আইএস জঙ্গিকে কুর্দিশ কারাগার থেকে সরানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে তাঁদের।
এর মধ্যেই আজ সিরিয়ার চারটি হাসপাতালে বোমা হামলার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়ার সরকার। গত মে মাসে সিরিয়ার চারটি হাসপাতালে ওই বিমান হামলা হয়। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধারাবাহিক সেই হামলার ভিডিয়ো-ও তুলে রাখা রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাহায্যে চলা ওই হাসপাতালে রুশ বাহিনী বোমা ফেলেছিল বলে দাবি করেছিল একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিক। কিন্তু মস্কো থেকে রুশ বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র সেই রিপোর্টটি সম্পূর্ণ ভুল বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থার ফাঁদে পা দিয়ে ওই রিপোর্টটি করেছিল ওই দৈনিক। যে তথ্যের উপর ভিত্তি করে খবরটি করা হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে রুশ সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy