Advertisement
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
North Korea

‘সঙ্কটে’ কিমের দেশ, অস্ট্রেলিয়াও

উত্তর কোরিয়া আগে দাবি করেছিল, সে দেশে কোনও করোনা সংক্রমণের খবর নেই। আমেরিকা ও জাপান অবশ্য সেই রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে।

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন।

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
সোল শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

দ্রুত টিকাকরণ সারতে মরিয়া প্রায় সব দেশ। সেই সঙ্গে কড়া করোনা-বিধি। গৃহবন্দি দশা চলছে বহু দেশে। কিন্তু তাতেও রক্ষা নেই। এক দিকে অতিমারি, অন্য দিকে দীর্ঘ লকডাউনে অর্থনীতি ভেঙে পড়ার মুখে। এ নিয়ে উদ্বেগ ব্রিটেন থেকে অস্ট্রেলিয়া, উত্তর কোরিয়া সর্বত্র।

উত্তর কোরিয়া আগে দাবি করেছিল, সে দেশে কোনও করোনা সংক্রমণের খবর নেই। আমেরিকা ও জাপান অবশ্য সেই রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। সম্প্রতি কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ় এজেন্সি (কেসিএনএ)-র একটি খবরে জানানো হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন জানিয়েছেন, দেশের পরিস্থিতি ‘সঙ্কটজনক’। দীর্ঘদিন ধরে কোয়রান্টিনে জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কর্মীরা সব নির্দেশ ঠিকমতো মানছেন না। তাতে দেশের নিরাপত্তা বিপর্যস্ত। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘কর্মীদের অযোগত্য ও অকর্মণ্যতায় উনি (কিম) ভীষণ ভাবে হতাশ। এতে কৃত্রিম ভাবে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। দেশের উন্নয়নমূলক কাজ ধাক্কা খাচ্ছে।’’ এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যদি ভাইরাস না-ই থাকে, তা হলে এত কড়াকড়ি কীসের!

অতিমারি রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে উত্তর কোরিয়া। সমস্ত সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। এমনকি তাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চিনের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছে উত্তর কোরিয়া। এতে অর্থনীতি ব্যাপক ভাবে ধাক্কা খেয়েছে।

কূটনীতিকদের একাংশ অবশ্য কেসিএনএ-র রিপোর্টের উপর ভরসা রাখতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, ভীষণই অস্পষ্ট খবর। বিশদে তথ্য দেওয়া নেই। তবে সংক্রমণ না-থাকা সত্ত্বেও কোয়রান্টিন নিয়ে উত্তর কোরিয়ার যে কড়াকড়ি, তাতে সমর্থন জানিয়েছেন তাঁরা। কূটনীতিকদের বক্তব্য, উত্তর কোরিয়ার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভীষণই দুর্বল। একবার করোনাভাইরাস ছড়ালে তা নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব। তাই আগে থেকেই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে কড়াকড়ি শুরু করেছিল তারা।

যেমন এক বছর আগের ঘটনা। ভয়ে সীমান্ত-শহর কেসংয়ে লকডাউন করে দিয়েছিলেন কিম জং উন। কারণ, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এক অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছিল। সন্দেহ করা হয়, সে কোভিড নিয়ে ঢুকেছে। এর দু’মাস পরে দক্ষিণ কোরিয়ার মৎস্য মন্ত্রকের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তিকে গুলি করে মারে উত্তর কোরিয়ার বাহিনী। সমুদ্রের ধারে তাঁরে মৃতদেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর কোরিয়া সরকারের সন্দেহ ছিল, লোকটি কোভিড নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ঢুকেছিল।

এ দিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র কোভ্যাক্স প্রকল্পে এ পর্যন্ত কোনও টিকা পায়নি কিমের দেশ। তাদের অবশ্য মে মাসের মধ্যে ১৭ লক্ষ ডোজ় পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার অনিচ্ছার জন্যই টিকা পাঠানো সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

ও দিকে, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোয় ক্ষোভে ফুঁসছে ব্রিটেনের একাংশ। সম্প্রতি এ নিয়ে লন্ডনে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেন লকডাউন-বিরোধীরা। অর্থনীতির বেসামাল অবস্থা স্বীকার করছে সরকারও। লকডাউন নিয়ে ক্ষুব্ধ অস্ট্রেলিয়াবাসীও। সিডনির শহরতলির একটি দোকানে ঝুলছে পোস্টার। তাতে লেখা— ‘প্রিয় গ্রাহক, অনির্দিষ্ট কালের জন্য আমাদের দোকান বন্ধ। কারণ স্কট মরিসন এক জন অযোগ্য নেতা। ১৮ মাস ধরে অতিমারি চলছে, আর উনি শুধু ৪ শতাংশের টিকাকরণের জন্য যথেষ্ট টিকা আনিয়েছেন!’ লকডাউনের থেকেও বাসিন্দাদের বেশি ক্ষোভ টিকার অভাব নিয়ে। এক বাসিন্দা যেমন বলেছেন, ‘‘আমরা দেশ থেকে বেরোতে পারছি না। কেউ দেশে আসতে পারছেন না। লকডাউন। রোজগারপাতি একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’

আরও পড়ুন:

অন্য বিষয়গুলি:

Kim Jung Un North Korea COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy