কিম জং উন
গোটা বিশ্বে ন’লক্ষের উপরে মৃত্যু হয়েছে। ৩ কোটি ছুঁতে চলল সংক্রমণ। মরিয়া হয়ে করোনা প্রতিরোধের পথ খুঁজছে রাষ্ট্রগুলো। পিছিয়ে নেই উত্তর কোরিয়াও। তবে এ পথ একটু ভিন্ন। ‘দাওয়াই’ আগ্নেয়াস্ত্রের নলে!
এ দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বেশ দুর্বল। সম্প্রতি ভারত থেকেও চিকিৎসা-সামগ্রী সাহায্য হিসেবে পাঠানো হয়েছে। করোনার চিকিৎসার তুলনায় তাই গোড়া থেকেই রোগ প্রতিরোধে বেশি জোর দিচ্ছে কিম জং উনের দেশ। জানুয়ারি মাস থেকে তাই করোনাভাইরাসের উৎস চিনের সীমান্ত বন্ধ করে দেয় পিয়ংইয়্যাং। কিন্তু তাতেও ভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঠেকানো যায়নি। জুলাই মাসে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে তারা। যদিও পিয়ংইয়্যাংয়ের তরফে কোনও দিন ঘোষণা করা হয়নি, কত জন করোনা-আক্রান্ত, কত জন মৃত। কোরীয় উপদ্বীপ অঞ্চলে নিযুক্ত মার্কিন বাহিনী (ইউএসএফকে)-র কম্যান্ডার রবার্ট অ্যাবরামস সম্প্রতি ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি অনলাইন বৈঠকে জানিয়েছেন, চিন সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় মারাত্মক চোরাচালান বেড়েছে উত্তর কোরিয়ায়। চিন থেকে করোনা-আক্রান্ত হয়ে দেশে ঢোকা রুখতে তাই ‘দেখলেই গুলি’র নির্দেশ দিয়েছে পিয়ংইয়্যাং প্রশাসন।
করোনার সম্ভাব্য প্রতিষেধক হিসেবে বেশ আশা জাগিয়েছিল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্র্যাজেনেকার ‘চ্যাডক্স ১’। কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় তারা ট্রায়াল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, এই ঘটনাই এ বার ‘সকলের ঘুম ভাঙাক’। হু-এর শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন বলেন, ‘‘এটা থেকেই সকলের বোঝা উচিত, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ওঠাপড়া থাকে। সব রকম পরিস্থিতির জন্য আমাদের তৈরি থাকা উচিত। বিজ্ঞানীদের নিরুৎসাহিত করছি না। কিন্তু এ রকম ঘটনা ঘটে।’’
হু-এর জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক বিভাগের প্রধান মাইক রায়ান বলেন, ‘‘এটা একটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই। এ লড়াই প্রাণ বাঁচানোর। বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে না, বিভিন্ন দেশের মধ্যেও প্রতিযোগিতা চলছে না।’’
বিষয়টি নিয়ে হু-র এত জোর দিয়ে বলার কারণই হল, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ না-করে, ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করে দিয়েছে চিন-রাশিয়া। গত ১১ অগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁদের ‘সাফল্যের’ খবর ঘোষণা করার পর থেকে নেতা-মন্ত্রী অনেকেই ভ্যাকসিন নিয়ে ফেলেছেন। চিন আরও আগে থেকে (জুলাই থেকে) করোনা-রোগীদের দেশীয় প্রতিষেধক প্রয়োগ করছে। আজ একটি করোনা-রোধী নাকের স্প্রে তৈরি করেছে বলে দাবি করেছে চিন। নভেম্বর থেকে তার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে।
সম্প্রতি চিন-রাশিয়ার দেখাদেখি পরীক্ষাধীন ভ্যাকসিন প্রয়োগের ভাবনাচিন্তা চলছিল মার্কিন প্রশাসনের অন্দরেও। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ঘটনার পরে অবশ্য কী হবে জানা নেই! আপাতত বই-বিতর্কে উত্তাল ওয়াশিংটন। সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড তাঁর বইয়ে দাবি করেছেন, জেনেবুঝে আমেরিকার করোনা পরিস্থিতিকে এত দিন হালকা করে দেখিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে আজ হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্পকে সরাসরি প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক— ‘‘কেন এত দিন মিথ্যা কথা বলেছেন মানুষের কাছে?’’ জবাবে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি মিথ্যে বলিনি। বরং মৃত্যু, মৃত্যু বলে আর্তনাদ করে লম্ফঝম্প করিনি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy