ফাইল চিত্র। ছবি—রয়টার্স।
সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব ও আমেরিকার সম্পর্কে নয়া টানাপড়েন শুরু হল। আমেরিকার একটি প্রথম সারির দৈনিকের সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ২০১৮ সালে খুনের পরেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের দিকে। এই প্রথম সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে করল আমেরিকা। সলমনের নির্দেশেই তাঁর কট্টর সমালোচক খাশোগিকে খুন করা হয়েছে বলে শুক্রবার সরাসরি দাবি করেছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা। সেই সঙ্গেই এই খুনের সঙ্গে যুক্ত ৭৬ জন সৌদি কর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জো বাইডেন প্রশাসন।
খাশোগি খুনে সৌদি যুবরাজের দিকে আঙুল ওঠার পর থেকেই বিষয়টি অস্বীকার করেছে সৌদি সরকার। আজও ফের আমেরিকার তোলা অভিযোগকে পুরোপুরি নস্যাৎ করেছে সৌদি প্রশাসন। আমেরিকার ওই রিপোর্টকে ‘নেতিবাচক, মিথ্যা এবং গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা। সৌদির তরফে এমন কড়া বিবৃতির পরে দু’দেশের মধ্যে টানাপড়েন আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ।
২০১৮-এর অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তানবুলের সৌদি দূতাবাসে ঢোকার পর থেকে খাশোগির আর কোনও সন্ধান মেলেনি। অনুমান, সেখানেই তাঁকে খুন করে দেহ লোপাট করে ফেলা হয়। তার পর দু’বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। খাশোগি যখন খুন হন, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাংবাদিক হত্যার বিষয়টি নিয়ে সে সময়ে তদন্ত চললেও হত্যার নেপথ্যে কারা ছিল, তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও বিভিন্ন সূত্রে এই খুনে আঙুল উঠেছিল সৌদি
যুবরাজের দিকেই। কিন্তু ট্রাম্প জমানায় তা ধামাচাপা পড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌদির সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সম্পর্ক মধুর। আরব দুনিয়ায় আমেরিকার সবচেয়ে বড় মিত্র দেশও সৌদি। কূটনীতিকদের একাংশের বক্তব্য, সে কারণেই বিষয়টি নিয়ে বেশি নড়াচড়া করতে
চাননি ট্রাম্প।
কিন্তু প্রচার পর্ব থেকে বাইডেন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হবেন। শুক্রবার আমেরিকার ‘ডিরেক্টর অব
ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স’ খাশোগি হত্যা নিয়ে তাদের মতামত নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘খাশোগিকে আটক বা হত্যা করতে ইস্তানবুলে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। সৌদি আরবে যুবরাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে আমরা এই মূল্যায়নে পৌঁছেছি।’
খাশোগি খুনে সৌদি যুবরাজের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলার পাশাপাশি এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৭৬ জন সৌদি নাগরিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাইডেন প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে সৌদি যুবরাজকে ছাড় দিলেও কড়া বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। তবে এর
জেরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যাতে প্রভাব না পড়ে সে দিকেও খেয়াল রেখেছে আমেরিকা। বাইডেন প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে শুধু কড়া বার্তা দিয়েই সৌদিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সৌদির সঙ্গে আমেরিকার দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে যাতে ছেদ না পড়ে,
তা যেমন দেখা হয়েছে, তেমনই আমেরিকা যে অন্যায়কে মেনে নেবে না, সেই বার্তাও দেওয়া
হয়েছে সৌদিকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy