ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। — ফাইল চিত্র।
কিয়ের স্টার্মারের লেবার পার্টি এ বার ৪০০-র বেশি আসন পেয়ে ব্রিটেনে ১৪ বছরের কনজ়ারভেটিভ শাসনের ইতি টানল। কনজ়ারভেটিভ নেতা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালেন। লেবার পার্টির এই উত্থানের নেপথ্যে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দলের ধারণা বদল বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। আর সেই বদলের কান্ডারি স্টার্মারই।
এক সময় ভারতের সঙ্গে লেবার পার্টির সম্পর্ক সুমধুর ছিল। কিন্তু জেরেমি করবিন যখন লেবার পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন তখন থেকেই সেই সম্পর্কে চিড় ধরে। ভারত সম্পর্কে জেরেমির সমালোচনামূলক মনোভাবের কারণে লেবার পার্টির সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি পায়। ব্রিটেন সরকার কখনওই কাশ্মীর ইস্যুতে নাক গলাতে চায়নি। সেখানে জেরেমির অবস্থান লেবার পার্টিকে বিপদে ফেলে।
২০১৯ সালে জেরেমি নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি একটি প্রস্তাব পাশ করেছিল। কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের হস্তক্ষেপ করার বিষয় ছিল। যা ভারত সরকার ভাল ভাবে নেয়নি। নয়াদিল্লি ওই প্রস্তাবের নিন্দা করে এবং বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে’ এ ধরনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে লেবার পার্টি। যদিও সে সময় ব্রিটেন সরকার স্পষ্ট জানায়, কাশ্মীর ইস্যু ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। সেখানে হস্তক্ষেপ করতে রাজি নয় ব্রিটেন।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লেবার কনফারেন্স হয়েছিল। সেখানে কাশ্মীর সংক্রান্ত বিতর্কিত বিষয় উত্থাপন করা হয়েছিল। কাশ্মীর সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, সরকারি ক্ষেত্রে সংঘাত বন্ধ করতে লেবার পার্টি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কাজ করবে। এটা একমাত্র তখনই সম্ভব হবে যখন ভারত ও পাকিস্তান এক হয়ে কাশ্মীরের শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলবে। এমনকি, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলেও সুর চড়িয়েছিলেন লেবার পার্টি নেতৃত্ব।
জেরেমি সরে যাওয়ার পর ২০২০ সালে লেবার পার্টির নেতৃত্বের ভোটে বিপুল জয় পান স্টার্মার। তার পরই দলের রাশ চলে আসে তাঁর হাতে। স্টার্মার লেবার পার্টির দায়িত্ব পেয়েই কাশ্মীর ইস্যুতে দলের অবস্থান বদলের পথে হাঁটেন। ব্রিটেনে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে স্টার্মার যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছিলেন। তাঁর বক্তৃতায় বার বার উঠে এসেছে বৈশ্বিক নিরাপত্তা, জলবায়ু সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার কথা।
প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় স্টার্মার বার বার স্বীকার করেছেন, কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। ভারত এবং পাকিস্তান, উভয় দেশ মিলেই এই সমস্যার সমাধান করবে। তাতে লেবার পার্টি কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। কূটনৈতিক মহলের মতে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেখানে নতুন সরকার গড়ার পর ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক ত্বরান্বিত করাই অন্যতম লক্ষ্য হবে তা বুঝেছিলেন স্টার্মার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy