Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Afghanistan War

Afghanistan: আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়েছিল আমেরিকা, আফগানিস্তান গড়তে নয়: বাইডেন

বাইডেন স্বীকার করেছেন, ঘটনা যে এত দ্রুত এ ভাবে মোড় নেবে, তা ভাবা যায়নি। আশরফ গনি তালিবানের বিরুদ্ধে লড়বেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন জো বাইডেন।

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন জো বাইডেন। ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ০৭:২৭
Share: Save:

পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প তো বটেই, আমেরিকার জনসাধারণের একটা বড় অংশই আফগান সঙ্কটের জন্য দুষছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। তার উত্তরে সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন বাইডেন। সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সমর্থনে যুক্তি সাজিয়ে বললেন, ‘‘আমি অনুতপ্ত নই।’’ তাঁর মতে, আমেরিকার সেনাবাহিনী প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধ সামলানোর জন্য পড়ে থাকতে পারে না। আফগানিস্তানে যা ঘটল, সেটা আফগান সামরিক এবং রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতা, বলেছেন বাইডেন।

বাইডেন স্বীকার করেছেন, ঘটনা যে এত দ্রুত এ ভাবে মোড় নেবে, তা ভাবা যায়নি। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি তালিবানের বিরুদ্ধে লড়বেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। তবু আফগান জনসাধারণের প্রতি পূর্ণ সহমর্মিতা এবং সাহায্যের আশ্বাস শুনিয়েও বাইডেন নিজের যুক্তিতে অনড় থেকে বললেন, সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করতেই হত। তাঁর কথায়, আমেরিকা অতীতে অনেকগুলো ভুল করেছে। সেই ভুল টেনে চলারও সীমা আছে। ‘‘আমি জানি, আমি সমালোচিত হব। কিন্তু আমার মধ্য দিয়েই ব্যাপারটার ইতি হোক। পরের প্রেসিডেন্টকে যেন আর এই দায়ভার বইতে না হয়।’’

বাইডেন দাবি করেন, আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েছিল আমেরিকা। আফগান রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে দিতে নয়। মানবাধিকারই কূটনীতির স্তম্ভ হওয়া উচিত, যুদ্ধ নয়, মন্তব্য করেন তিনি। যদিও প্রয়োজনে ভবিষ্যতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে হতে পারে, সে কথা জানিয়ে রাখতে ভোলেননি। আমেরিকানদের ফেরাতে বাধা দেওয়া হলে যে ছেড়ে কথা বলা হবে না, জানিয়ে দিয়েছেন তা-ও।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনই দোহায় তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে শান্তি আলোচনার সূচনা করেছিল তাঁর প্রশাসন। সেই ট্রাম্প আফগান পরিস্থিতির জন্য নিজের উত্তরসূরিকেই দুষেছেন। একের পর এক বিবৃতিতে বাইডেনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছেন, ‘‘বাইডেনের পদত্যাগ করার সময় এসে গিয়েছে। আফগানিস্তানে উনি যা করলেন, আমেরিকার ইতিহাসে তা সবচেয়ে লজ্জাজনক পরাজয় বলে বিবেচিত হবে।’’ তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে আফগানিস্তান তালিবানের হাতে চলে যেতে পারত না, দাবি ট্রাম্পের।

গোটা পরিস্থিতির জন্য বর্তমান প্রেসিডেন্টকে দুষছেন আমেরিকার বহু সাধারণ মানুষও। মেরিল্যান্ডে ছুটি কাটানো কাটছাঁট করে বাইডেন আজ হোয়াইট হাউসে ফেরেন। গত কয়েক দিন একটিও কথা বলেননি তিনি। শুধু জাতীয় নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক সেরেছিলেন। রিপাবলিকান হাউস সদস্য মাইকেল ম্যাককেল তাই বলছিলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের হাতে কিন্তু দাগ লেগে গেল। রক্তের দাগ।’’

প্রেসিডেন্টের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল সংবাদমাধ্যমও। তবে বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের দাবি ছিল, আপাতত আফগানিস্তান থেকে সব আমেরিকান নাগরিককে দেশে ফেরানোই প্রেসিডেন্টের অগ্রাধিকার। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভানও এক সাক্ষাৎকারে বলে ফেলেন, ‘‘আমরা যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে অনেক দ্রুত তালিবান গোটা দেশকে কব্জা করে ফেলেছে।’’

আমেরিকা-সহ ৬৫টি দেশ তালিবান নেতৃত্বের কাছে আজ আর্জি জানিয়েছে, যে সব আফগান বা বিদেশি নাগরিক আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যেতে চান, তাঁদের যেন নিরাপদে, যেতে দেওয়া হয়। সেখানে যেন অন্তত বন্দুকের জোর না দেখান তালিবান নেতৃত্ব। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আজই বৈঠকে বসে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশগুলি। রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকান দূত লিন্ডা গ্রিনফিল্ড টমাস বলেন, ‘‘বিশ্বের উচিত আফগানিস্তান যাতে ফের সন্ত্রাসের কেন্দ্র না হয়ে উঠতে পারে তা নিশ্চিত করা।’’

চিন অবশ্য তালিবান নেতৃ্ত্বকে স্বাগতই জানিয়েছে। আজ বেজিংয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, ‘‘আমরা আশা করছি, শান্তি আর অহিংসার পথে আফগানিস্তানে ক্ষমতা হস্তান্তর হতে চলেছে। আশা করব তালিবান নেতৃত্ব সে দেশের মানুষের সুরক্ষা ও অধিকারের দিকটি বিবেচনা করে দেশ শাসন করবেন।’’ আফগানিস্তানের অন্যতম এই পড়শি আরও জানিয়েছে, অহিংস পথে হাঁটলে তারা তালিবানকে আর্থিক সাহায্য দেবে। কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে লেখা হয়েছে, ‘আমেরিকাকে বিশ্বাস করলে কী হয়, গোটা বিশ্ব তা জানে। তা-ও তারা সে দেশের উপরেই ভরসা করে আর ঠকে’। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। আমেরিকার নাম না করে বলেছেন, ‘‘অন্য দেশের সংস্কৃতিকে আপন করতে গেলে মানসিক ভাবে পরাধীন হয়ে যেতে হয়। আফগানিস্তানের মানুষ সেই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙেছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan War Afghanistan usa taliban Joe Biden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy