ফাইল চিত্র।
তাঁর প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের বক্তৃতার বেশির ভাগ অংশ জুড়েই থাকল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি। আর সেই বক্তৃতায় নিজের দেশের আইনসভার সদস্যদের সামনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আরও এক বার চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আরও এক বার জানালেন, গোটা বিশ্ব থেকে অর্থনৈতিক ভাবে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্থা তাঁরা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন।
হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে গত কাল বাইডেন যখন বক্তৃতা দিচ্ছেন, তখন সেখানে উপস্থিত অনেকেরই পরনে ইউক্রেনের জাতীয় পতাকার দুই রং হলুদ আর নীল। অনেকের হাতেও ছিল ইউক্রনের পতাকা। বাইডেন যত বার পুতিনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন, তত বারই হাততালিতে ফেটে পড়েছে গোটা সভা। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কী কী মূল্য পুতিনকে চোকাতে হবে, তা রুশ প্রেসিডেন্ট এখনও কল্পনা করতে পারছেন না। তবে নিজের এই বক্তব্যের বিশদ ব্যাখ্যায় যাননি বাইডেন। শুধু জানিয়েছেন, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে রাশিয়াকে পঙ্গু করার পথে এগোচ্ছেন তাঁরা।
আপাতত ব্রিটেন এবং কানাডা সরকারের দেখানো পথে হেঁটে রুশ উড়ান সংস্থার সমস্ত বিমান আমেরিকান আকাশসীমায় ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাইডেন প্রশাসন। ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ রুশ ধনকুবেরদের ইয়ট থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন একাধিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দিয়েছেন বাইডেন। সেই সঙ্গে নেটো বাহিনী যে ইউক্রেনকে রসদ জুগিয়ে সমর্থন করছে, তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
বক্তৃতায় আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘ইতিহাস থেকে আমরা শিখেছি, একনায়কেরা যখন তাঁদের আগ্রাসনের কোনও মূল্য চোকান না, তখন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়। তাঁরা এগোতে থাকেন আর আমেরিকা তথা গোটা বিশ্বকে তার ভার বইতে হয়। সেই জন্যই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ইউরোপে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নেটোর সৃষ্টি হয়েছিল। আমেরিকাও তার সদস্য। এর একটা গুরুত্ব আছে। আমেরিকান কূটনীতিরও একটা গুরুত্ব আছে।’’
পুতিন যে কূটনীতি আর আলোচনার রাস্তায় না হেঁটে যুদ্ধ আর আগ্রাসনের পথ বেছে নিয়েছেন, তার কড়া সমালোচনা করেছেন বাইডেন। বলেছেন, ‘‘পুতিন কূটনীতির প্রচেষ্টাকে অগ্রাহ্য করেছেন। ভেবেছিলেন নেটো কোনও প্রত্যাঘাত করবে না। উনি
ভেবেছিলেন আমাদের দ্বিখণ্ডিত করবেন। কিন্তু উনি ভুল ছিলেন। আমরাও তৈরি।’’ বাইডেনের আরও বক্তব্য, ইউক্রেন আক্রমণ করে দখল করা খুব সহজ হবে বলে ভেবে নিয়েছিলেন পুতিন ও তাঁর সরকারের শীর্ষ কর্তারা। কিন্তু ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধ যে এতটাও কঠিন হতে পারে, তার আন্দাজ রুশ প্রেসিডেন্ট করতে পারেননি।
আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘পুতিন ভেবেছিলেন ইউক্রেন আক্রমণ করলে গোটা বিশ্ব তাঁর পায়ের তলায় চলে আসবে। এত কঠিন একটা প্রতিরোধের দেওয়ালে যে তাঁকে ধাক্কা খেতে হবে, তা উনি ভাবতেও পারেননি। ওঁকে ইউক্রেনের মানুষের মুখোমুখি হতে হয়েছে।’’ বাইডেন জানিয়েছেন, মিত্র দেশগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাশিয়ার বৃহত্তম ব্যাঙ্ককে বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা।
গত কাল বাইডেনের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমেরিকান নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হল। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের যত দ্রুত সম্ভব এই আগ্রাসনকে রুখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy