জাকার্তা।—ছবি রয়টার্স।
জনবসতি, স্কুল, কলেজ, প্রশাসনিক ভবন, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট, ক্রমশ জলের তলায় চলে যাচ্ছে গোটা শহর। এই পরিস্থিতিতে জাকার্তা থেকে রাজ্যপাট সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ১৮০০ কিলোমিটার দূরের বোর্নিয়োকে রাজধানী ঘোষণা করা হবে জানাল ইন্দোনেশিয়া সরকার। যদিও মুখে সে কথা স্বীকার করা হয়নি। বরং অন্য ব্যাখ্যাই দেওয়া হচ্ছে।
১৭ শতক থেকে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। ‘মৃত্যুমুখী’ শহরটাকে না বাঁচিয়ে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পিছনে একাধিক কারণ দেখিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। যেমন, ১) বোর্নিয়োতে কম ভূমিকম্প হয়, কম বন্যা, কম দাবানল হয়। ২) ভৌগোলিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, দেশের একেবারে মধ্যভাগে এর অবস্থান। ৩) বালিকপাপান ও সামারিন্দার মতো বড় শহরের কাছাকাছি বোর্নিয়ো। ৪) পরিকাঠামোগত ভাবে উন্নত। ৫) সরকারি ভবন তৈরির জন্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর খালি জমি রয়েছে সেখানে। প্রেসিডেন্টের আরও বক্তব্য, জাকার্তা ও জাভায় জনসংখ্যা যথাযথ নয়। অর্থনৈতিক পরিকাঠামোও সঠিক নয়। নিন্দুকেরা অনেকেই বলছেন, ‘আসল’ কারণটিই উল্লেখ করেননি। সত্যিটা হল: জাকার্তা ডুবে যাচ্ছে।
শহরের উত্তর অংশ ক্রমশ জাকার্তা উপসাগরে তলিয়ে যাচ্ছে। বর্ষা নামলে বন্যা অবশ্যম্ভাবী। শহরের ভিতর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ১৩টি নদী। সেই জল ঠিক ভাবে উপসাগরে পৌঁছতে পারছে না। সমুদ্র-বাঁধের অবস্থা খারাপ। জাকার্তার ৪০% সমুদ্রের জলস্তরের নীচে।
কেন এই অবস্থা জাকার্তার? এখানের ১ কোটিরও বেশি বাসিন্দার ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য একাধিক নদী-বাঁধ বা বিশেষ পাইপলাইন নেই। শহরের ৪০% বাসিন্দা মাটির নীচের জলের উপরে নির্ভরশীল। এ ভাবে মাটির তলার জল বার করে নেওয়ায়, যে জমির উপরে শহর অবস্থিত, তা ক্রমশ বসে যাচ্ছে।
তা ছাড়া, শহরে যথাযথ নিকাশি ব্যবস্থা নেই। নোংরা, আবর্জনা জমা হয় সেপটিক ট্যাঙ্কে। তা মেশে মাটিতে। তাই জাকার্তার ভূগর্ভস্থ জল খাওয়াও বিপজ্জনক। কংক্রিটের জঙ্গল এতই বেড়ে গিয়েছে, সবুজ হারিয়েছে শহর। বৃষ্টির জল মাটিতে পৌঁছতে বাধা হয়েয়েছে কংক্রিট। ভূমিক্ষয় বাড়ছে।
পরিস্থিতি এমন, প্রতি বছর উত্তর জাকার্তার বিভিন্ন এলাকা গড়ে ২৫ সেন্টিমিটার করে জলের তলায় চলে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিশ্বের সব চেয়ে দ্রুত ডুবছে এ শহর। আগামী এক দশকে শহরের চার ভাগের এক ভাগই হারিয়ে যাবে সাগরের জলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy