Advertisement
E-Paper

অবিশ্বাস্য! ধড় থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া মাথা জুড়ে বালককে বাঁচালেন ইজ়রায়েলের চিকিৎসকেরা

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের রাস্তায় ১২ বছরের সুলেইমান সাইকেল চালাচ্ছিলেন। সেই সময় একটি গাড়ি দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে তাকে। তাতেই ধড় থেকে আলাদা হয়ে যায় সুলেইমানের করোটি।

Image of Dr. Ohad Einav and Ziv Asa with 12-year-old Suleiman Hassan at Hadassah Medical Center

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার ঠিক আগে চিকিৎসক ওহাদ আইনাভের সঙ্গে সুলেইমান। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ ১৫:২৫
Share
Save

অবিশ্বাস্য! দুর্ঘটনায় করোটির সঙ্গে মেরুদণ্ডের সংযোগকারী হাড় স্থানচ্যুত হয়ে গিয়েছিল ১২ বছরের সুলেইমান হাসানের। বিরল অস্ত্রোপচার করে সুলেইমানের প্রাণ বাঁচিয়ে দিলেন ইজ়রায়েলের চিকিৎসকেরা। এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে ইজ়রায়েলের স্থানীয় সংবাদপত্র ‘দ্য টাইমস অফ ইজ়রায়েল’-এ। ছেলেকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাবা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন চিকিৎসকদের। বলেছেন, ‘‘আমি যত দিন বাঁচব, আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যাব। আমার একমাত্র সন্তানের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।’’

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের বাসিন্দা সুলেইমান। সাইকেল চালানোর সময় তাকে একটি গাড়ি দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে। ধাক্কার অভিঘাতে সুলেইমানের ধড় ও করোটির সংযোগস্থল থেকে করোটি আলাদা হয়ে যায়। তার পর তড়িঘড়ি তাকে ‘এয়ার লিফ্‌ট’ করে আনা হয় দক্ষিণ-পশ্চিম জেরুসালেমের এইন কেরেমের হাদাস্সা হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার বিভাগে। কালক্ষেপ না করে শুরু হয় সাম্প্রতিক কালে চিকিৎসাশাস্ত্রে জটিলতম এবং সম্ভবত বিরলতম অস্ত্রোপচার।

দীর্ঘ ক্ষণ অস্ত্রোপচারের পর সাফল্য আসে। গোটা প্রক্রিয়ার ভার ছিল যে চিকিৎসকের কাঁধে, সেই ওহাদ আইনাভ বলছেন, ‘‘আমরা যে বাচ্চাটিকে বাঁচাতে পেরেছি তার কৃতিত্ব কিন্তু আমাদের জ্ঞানবুদ্ধি, আর অস্ত্রোপচার কক্ষে থাকা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির। এটা ছাড়া আমাদের যুদ্ধ বৃথা যেত।’’ চিকিৎসকেরা মনে করছেন, এই অস্ত্রোপচারে সফল হওয়া অলৌকিক ঘটনার চেয়ে কম নয়। তাঁরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনায় ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে ব্যর্থ হওয়ার। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঘটেছে একে বারেই উল্টো।

চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম ‘বাইল্যাটেরাল অ্যাটলান্টো অক্সিপিটাল জয়েন্ট ডিসলোকেশন’। সাধারণত, একে চলতি ভাবে ‘অর্থোপেডিক ডিক্যাপিটেশন’ বলা হয়ে থাকে। ‘অক্সিপিটাল কনডাইল’ হল, মেরুদণ্ড এবং মাথার খুলির সংযোগস্থলের হাড়।

হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, এই জটিল অস্ত্রোপচারের ঘটনাটি ঘটেছে গত মাসে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তখনই তা প্রকাশ্যে জানাতে চাননি। এক মাস পর্যবেক্ষণে রাখার পর সুলেইমানকে সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার পরেই সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার কথা জানিয়েছেন। সুলেইমানকে যে আরও কয়েক মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, তা-ও জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ওহাদ জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পর সুলেইমানের স্নায়বিক কোনও সমস্যা নেই। কারও সাহায্য ছাড়াই সে হাঁটতে পারছে। যাকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক ওহাদ।

এ তো গেল চিকিৎসাবিজ্ঞানের জয়পতাকা ওড়ানোর কাহিনি। ছেলেকে ফিরে পেয়ে কম খুশি নন সুলেইমানের বাবা। গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন তিনি ছেলেকে কাছছাড়া করেননি। ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় চোখের জল বাধ মানেনি বাবার। বার বার হাত জোড় করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসকদের। তিনি বলেন, ‘‘আমি যত দিন বাঁচব, আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যাব। আমার একমাত্র সন্তানের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।’’ তার পর নিজেকে একটু সামলে তিনি বলেন, ‘‘ওকে বাঁচিয়ে দিল চিকিৎসকদের পেশাদারি দক্ষতা এবং সঠিক সময়ে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা। আমি শুধু বলতে পারি, অসংখ্য ধন্যবাদ।’’

operation Rare Jerusalem

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}