—ফাইল চিত্র।
‘নিরাপদ’ বলে পরিচিত যে রাষ্ট্রপুঞ্জের স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিচ্ছিলেন ঘরছাড়া প্যালেস্টাইনিরা, এ বার তারই একটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইজ়রায়েল। মধ্য গাজ়ার নুসেরাতে হওয়া এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন, যার মধ্যে অন্তত ছাব্বিশ জন মহিলা ও শিশু রয়েছেন বলে খবর। তবে কিছু সূত্রের মতে, চল্লিশেরও বেশি সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বৃহস্পতিবারের এই হামলায়। ইজ়রায়েল সেনার অবশ্য দাবি, স্কুলগুলিতে আদৌ কোনও সাধারণ নাগরিক ছিলেন না, বরং সেগুলিতে আশ্রয় নিচ্ছিল জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের সদস্যেরা।
সংবাদ সংস্থাকে এক স্থানীয় বাসিন্দা আয়মান রাশিদ জানিয়েছেন, এ দিন সকালে কম করে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলে রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক দফতর পরিচালিত ‘আল-সারদি’ নামে স্কুলটিতে। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত ওই স্কুলে তখন শতাধিক প্যালেস্টাইনি ছিলেন। মূলত তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় হামলা চালায় ইজ়রায়েল বাহিনী। হামলার জেরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় স্কুল ও গোটা এলাকা। আগুন লেগে তা ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক ক্লাসরুমে। কোনও রকমে যখন তিনি ও আরও অনেকে উদ্ধারকাজে পৌঁছন, তখন কোথাও পড়ে রয়েছে মাথা চৌচির হওয়া নিথর দেহ, কোথাও আবার পড়ে রয়েছে জমাট বাধা রক্ত। উদ্ধার হওয়া দেহ ও আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে গাজ়ার আল-আকসা হাসপাতালে। তবে সেখানেও দীর্ঘদিনের হামলায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে পরিকাঠামো। নেই পর্যাপ্ত জ্বালানিও।
এ দিনের হামলার ঘটনার কিছু ছবি ও ভিডিয়ো ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, হামলার জেরে কী ভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আল-সারদি। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, আল-আকসার সামনে প্লাস্টিক বা সাদা কাপড়ে ঢাকা দেওয়া দেহগুলির মধ্যে থেকে প্রিয়জনের দেহ খুঁজছেন কেউ।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজকের ঘটনাকে ‘ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড’ বলে দাবি করেছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এ দিনের হামলায় এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪০ জন। নিহতদের মধ্যে ১৪ জন শিশু ও ন’জন মহিলা। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৪ জন। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্যালেস্টাইনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার কমিশনার জেনারেল, ফিলিপ লাজ়ারিনি এক্স মাধ্যমে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এ দিনের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫।
আজকের হামলায় যে ফের ব্যাপক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ প্যালেস্টাইনিরা, তা অবশ্য মানতে নারাজ ‘ইজ়রায়েলি ডিফেন্স ফোর্স’ (আইডিএফ)। এই হামলার বিষয়ে আগে থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানানো হয়নি, এমনটা অভিযোগ করেছিলেন ফিলিপ। তবে ইজ়রায়েল সেনার প্রতিনিধি পিটার লার্নারের দাবি, রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই স্কুলে হামাসের ঘাঁটি ছিল। তাদের নির্মূল করতেই এই হামলা। ঘটনায় যে কোনও সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা মানতে নারাজ তিনি। পরে এও বলেন, হামাস নিজ স্বার্থে মৃত্যু নিয়ে এমন ‘মিথ্যে গল্প’ বলছে।
৭ অক্টোবর ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এই স্কুলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন প্যালেস্টাইনের বহু সাধারণ নাগরিক। সাধারণত রাষ্ট্রপুঞ্জের এই স্কুল ও বহুতলগুলিকে সাধারণ মানুষের জন্য ‘নিরাপদ’ বলে মনে করা হয়। তবে ফিলিপ লাজ়ারিনির অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত ১৮০ এমন বহুতলে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। ফলে এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছেন সাড়ে চারশোরও বেশি মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy