হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মূলত দু’টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজ়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি যেমন আলোচনা হয়েছে, তেমনই কথাবার্তা হয়েছে ইজ়রায়েলি পণ্যের উপর মার্কিন শুল্ক নিয়েও। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মুখোমুখি বসলেন দুই রাষ্ট্রনেতা। শুল্ক কমানোর বিষয়ে কোনও আভাস না-দিলেও, গাজ়ায় দ্রুত যুদ্ধ থামবে বলে আশাবাদী ট্রাম্প।
পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটি আমেরিকার ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ হিসাবেই পরিচিত। তবে মার্কিন শুল্কের ঘা পড়েছে ইজ়রায়েলের উপরেও। আমেরিকার বাজারে ইজ়রায়েলি পণ্যের উপর ১৭ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। আমেরিকা নয়া শুল্কনীতি ঘোষণার পরে এই প্রথম ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করলেন কোনও দেশের রাষ্ট্রনেতা। বৈঠক শেষে ওভাল অফিসে ট্রাম্পের পাশে বসে নেতানিয়াহু জানান, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যে ঘাটতি দূর করতে আগ্রহী ইজ়রায়েল। যৌথ সাংবাদিক বিবৃতিতে তিনি আরও জানান, ইজ়রায়েল খুব দ্রুত এই পদক্ষেপ করতে চায়। এটি অন্য দেশগুলির কাছে একটি ‘মডেল’ হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি। ট্রাম্পও জানিয়েছেন, তাঁদের খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। তবে ইজ়রায়েলি পণ্যের উপর শুল্কে কোনও ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে কোনও আভাস দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প বলেন, “ভুলে যাবেন না আমরা ইজ়রায়েলকে অনেক সাহায্য করি। আমরা ইজ়রায়েলকে বছরে ৪০০ কোটি ডলার দিই। এটাই অনেক।”
বস্তুত, গাজ়ায় প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র হামাস গোষ্ঠীর সঙ্গে ইজ়রায়েলের সংঘর্ষে দীর্ঘ দিন ধরে নেতানিয়াহুদের পাশেই দাঁড়িয়ে আমেরিকা। তবে সোমবার ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে ট্রাম্পের বক্তব্য, তিনি চান এ বার গাজ়ায় যুদ্ধ থামুক। শীঘ্রই এই যুদ্ধ বন্ধ হবে বলেও আশাবাদী তিনি। গত বছরে আমেরিকায় নির্বাচনী প্রচারের সময়ে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি গাজ়ায় যুদ্ধ থামাবেন। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি যুদ্ধ থামা দেখতে চাই। আমার মনে হয় এই যুদ্ধ একটি পর্যায়ে এসে থামবে, সেই সময়ের খুব বেশি দেরি নেই।”
আরও পড়ুন:
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে যখন ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল নেতানিয়াহুর, ওই সময় দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনার প্রধান বিষয়ই ছিল ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ পরিস্থিতি! সেই বৈঠক থেকেই হামাসের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার পরে গত দু’মাসে ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। প্রথম দফার সংঘর্ষবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে নতুন করে হামাসের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। প্রায়ই ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ছে গাজ়া ভূখণ্ডে। কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় ফের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনাও চলছে।