Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
corona virus

ধাঁধার উত্তর কি রক্তেই লুকিয়ে

নবতম সংযোজন— কোভিড-১৯ থেকে বেঁচে ফেরা রোগীর শরীরে তিন-চার মাসেই উধাও অ্যান্টিবডি। কারও কারও শরীরে অ্যান্টিবডিই নেই!

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০৫:৪৬
Share: Save:

সাত মাস পেরিয়েও করোনা-ধাঁধার সমাধান করতে পারছেন না বিশ্বের কোনও ‘গোয়েন্দা’। নাজেহাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-সহ তাবড় বিজ্ঞানীরা। রহস্যে রোজই যোগ হচ্ছে নয়া সূত্র। যার নবতম সংযোজন— কোভিড-১৯ থেকে বেঁচে ফেরা রোগীর শরীরে তিন-চার মাসেই উধাও অ্যান্টিবডি। কারও কারও শরীরে অ্যান্টিবডিই নেই!
তবে কি করোনা রুখতে অ্যান্টিবডি যথেষ্ট নয়? রহস্য আরও ঘনীভূত করেছে দ্বিতীয় তথ্যটি। করোনা সংক্রমণের পরে সুস্থ হওয়া বহু রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডির দেখা মিলছে না। এ অবস্থায় অ্যান্টিবডির গুরুত্ব নস্যাৎ করছেন না বিজ্ঞানীরা। কিন্তু গবেষকদের একটি বড় অংশের দাবি, দীর্ঘমেয়াদি করোনা-প্রতিরোধ ক্ষমতা হয়তো রয়েছে অন্য একটি কোষে। গোপনে তারাই সুস্থ করে তুলছে লাখো রোগীকে। সেটি হল, টি-সেল বা টি-লিম্ফোসাইট।
টি-সেল হল এক ধরনের হোয়াইট ব্লাড সেল বা শ্বেত রক্তকণিকা। যা তিন ধরনের হয়, গ্রানুলোসাইট, মনোসাইট, লিম্ফোসাইট। লিম্ফোসাইট আবার দু’রকমের, টি-সেল ও বি-সেল। টি-সেল এক প্রকার ইমিউন সেল। এই কোষদের মূল কাজ হল, হামলাকারী জীবাণুকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করা। ‘অ্যাকুয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিন্ড্রোম’ বা এডস হল টি-সেলের অসুখ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে এত দিন প্রচারের আলোর বাইরে থাকা টি-সেলই হয়তো তুরুপের তাস হয়ে উঠবে।
লন্ডনের কিং’স কলেজের ইমিউনোলজির অধ্যাপক তথা ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউট-এর বিজ্ঞানী দলের প্রধান অ্যাড্রিয়ান হেইডে বলেন, ‘‘বিষয়টা এ রকম— শত্রুর হামলা জানিয়ে শ্বেত রক্তকণিকা অ্যালার্ম বাজিয়ে দেয়। এর পর চার-পাঁচ দিনের মাথায় কাজ শুরু করে টি-সেল। ভাইরাস-আক্রান্ত কোষগুলিকে চিহ্নিত করে এবং শেষ করে।’’ এতে সাহায্য করে টি-সেলের উপরিভাগে থাকা প্রোটিনটি। সেটি ভাইরাসের প্রোটিনের সঙ্গে জুড়ে যায় এবং লড়াই শুরু করে। সংক্রমণের বহু বছর পরেও ‘মেমারি চিপে’র মতো থেকে যায় টি-সেল। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, অ্যান্টিবডি টেস্ট করে অনেকেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু দেখা গিয়েছে তাঁদের টি-সেল পজ়িটিভ। এমনকি উপসর্গহীন রোগীদের শরীরেও করোনা রুখতে পারে এমন টি-সেলের সন্ধান মিলেছে। আবার যে সব রোগীর বাড়াবাড়ি হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে তাঁদের টি-সেল কাজ করছে না।
বিজ্ঞানীরা এ-ও জানাচ্ছেন, রক্তের পুরনো নমুনাতেও (অতিমারি শুরু হওয়ার অনেক আগে সংগ্রহ করা) করোনা-রোধী টি-সেল মিলেছে। অর্থাৎ, করোনা সংক্রমণ শুরুর আগেই কিছু জনের শরীরে ভাইরাসটিকে চিহ্নিত করতে পারে, এমন টি-সেল ছিল। হেইডে-র কথায়, ‘‘আক্রান্ত হওয়ার পরেও যখন অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না, তখন এটা স্পষ্ট, টি-সেল কাজ করছে। খুবই ভাল খবর। কারণ ভ্যাকসিন তৈরিতে হয়তো মোক্ষম ভূমিকা নেবে টি-সেল।’’ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে এগিয়ে আছে। তাদের সম্ভাব্য প্রতিষেধকে ‘টি সেল’ তৈরি হচ্ছে। অ্যান্টিবডির আয়ু ফুরোলেও ফের হামলায় ভরসা দেবে টি-সেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Virus Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy