২২ বছরের ওই তরুণী মাহশা আমিনি।
রাস্তায় বেরিয়ে হিজাব পরেননি। তাই ‘শিক্ষা দেওয়ার’ জন্য পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরেই রহস্যজনক ভাবে মারা গেলেন ২২ বছরের তরুণী। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার, ইরানের রাজধানী তেহরানে। তরুণীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি।
বৃহস্পতিবার পরিবারের সকলের সঙ্গে গাড়িতে ইরানের কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে এক আত্মীয়ের বাড়ি আসছিলেন ২২ বছরের ওই তরুণী মাহশা আমিনি। সেই সময় তাঁদের গাড়ি আটকায় ইরানের নীতিপুলিশ। ইসলামিক রীতি মেনে মহিলারা পোশাক পরছেন কি না, হিজাব পরছেন কি না, তা দেখাই এই নীতিপুলিশদের কাজ। সে দিন গাড়িতে আমিনির হিজাব পরেননি বলে তাঁদের অভিযোগ। আমিনির পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের সামনেই আমিনিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিজেদের গাড়িতে তোলে নীতিপুলিশ।
এর পরের ঘটনাক্রম উঠে এসেছে আমিনির ভাই কিয়ারাশের কথায়। কিয়ারাশ জানান, তাঁর বোন আমিনিকে এক ঘণ্টার জন্য স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়, আমিনিকে ইসলামিক রীতি-আচার শেখানো প্রয়োজন। কিন্তু এক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর কিয়ারাশ দেখেন থানার সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে দাঁড়াচ্ছে। তার পরেই তাঁদের খবর দেওয়া হয় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আমিনিকে। কিছু সময় পরে আমিনির মৃত্যুসংবাদ জানানো হয় পরিবারকে।
ইরানের আধা সরকারি সংবাদসংস্থা আইএসএনএ-র তরফে এই খবরটি প্রথম প্রকাশ্যে আনা হয়। খবরটি প্রকাশ্যে আসার পরেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেন সে দেশের মানবাধিকার রক্ষার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। সমালোচনার মুখে নীতিপুলিশের তরফে একটি ‘সম্পাদিত’ সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়, যে ফুটেজে পুলিশের সঙ্গে আমিনির কথোপকথন চলার সময়ে মাঝের প্রায় ১৯ সেকেন্ড নেই। ১৯ সেকেন্ড আগের অংশে একটি আলোকোজ্জ্বল ঘরে আমিনিকে বসে থাকতে দেখা দেলেও পরের অংশে আধো অন্ধকার জায়গায় এক আধিকারিককে আমিনির সামনে কিছু বলতে দেখা যায়। তার পরেই অচৈতন্য হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আমিনি। পুলিশের দাবি, আগে থেকেই হৃদ্রোগের সমস্যায় ভুগছিলেন আমিনি। যদিও আমিনির পরিবারের দাবি, কোনও রকম শারীরিক সমস্যা ছিল না তাঁর।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এই ঘটনায় টুইট করে জানিয়েছেন, ‘আমেরিকা আমিনির রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে সম্যক ভাবে অবহিত রয়েছে।’ প্রসঙ্গত, ইরানের উগ্র মৌলবাদ নিয়ে বার বার সরব হয়েছে আমেরিকা-সহ পশ্চিম বিশ্বের দেশগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy