হিজাব-বিরোধী আন্দোলন রুখতে বলপ্রয়োগেই ভরসা রেখেছে ইরান। তারই নিদর্শন হিসেবে জেল-জরিমানার পরে এ বার শাস্তির তালিকায় জুড়ল মানসিক চিকিৎসা ও মর্গ পরিষ্কার করার মতো ঘটনা।
৬১ বছরের আফশানে বায়েগন হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের সমর্থক। পেশায় অভিনেত্রী এই মহিলাকে দু’বছরের কারাবাসের শাস্তি দিয়েছে তেহরানের একটি আদালত। এর পাশাপাশি সপ্তাহে এক দিন তাঁকে মনোরোগবিশেষজ্ঞের দফতরে যেতে হবে। আদালতের দাবি, আফশানে মানসিক ভাবে অসুস্থ। হিজাব না পরার এই মানসিকতা থেকেই তাঁর মধ্যে ‘চরিত্রহীনতার’ বীজ বপন হতে পারে। তবে আফশানে নতুন নন, ইরানের আর এক অভিনেত্রী আজ়াদে সামাদিকেও একই শাস্তি দিয়েছে ইরানের এক আদালত। সামাদির ‘অপরাধ’ একটি অনুষ্ঠানে তিনি হিজাবের পরিবর্তে টুপি পরেছিলেন। এই ‘মানসিক চিকিৎসা’ থেকে রেহাই পাচ্ছে না স্কুলপড়ুয়া মেয়েরাও।
আর একটি ঘটনায় হিজাব না পরায় এক মহিলাকে এক মাস ধরে মর্গের মৃতদেহ পরিষ্কার করার শাস্তি দেয় আদালত। গাড়ি চালানোর সময় হিজাব পরেননি ওই মহিলা। সেটাই চরম অপরাধ, এমন দাবি বিচারপতিদের।
মাহশা আমিনির মৃত্যুর ফলে তৈরি হওয়া প্রতিবাদ রুখতে একের পর এক দমনমূলক নীতি নিচ্ছে দেশটির প্রশাসন। জেল, জরিমানা, গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া তো রয়েইছে। বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত মহিলারা যদি হিজাব না পরেন তবে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য সংস্থাকে চাপও দিচ্ছে প্রশাসন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইরানের পার্লামেন্ট জুলাই মাসের শেষে নারীস্বাধীনতা ও হিজাব সংক্রান্ত একটি বিল প্রস্তাবিত হয়েছে। তাতে ইঙ্গিত, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)