অগ্নিগর্ভ ইরান। ছবি রয়টার্স।
মেয়ের মৃত্যু নিয়ে প্রশাসন মিথ্যা কথা বলেছে। মৃত্যুর পর মেয়ের মুখ দেখতে দেওয়া হয়নি। ইরান প্রশাসনের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করে ক্ষোভ উগরে দিলেন মাহশা আমিনির বাবা। পুলিশি হেফাজতে মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান। এই আবহে মাহশার বাবার এই অভিযোগ বিক্ষোভের আগুনে কার্যত ঘি ঢালল বলেই মনে করা হচ্ছে।
হিজাব ঠিক মতো না পরে বেরোনোর ‘অপরাধে’ ২২ বছর বয়সি মাহসাকে গ্রেফতার করেছিল ইরানের নীতিপুলিশ। ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পরই রহস্যজনক ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশি হেফাজতে অত্যাচারের কারণেই ওই তরতাজা প্রাণ অকালে ঝরেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যা ঘিরে অগ্নিগর্ভ ইরান।
যদিও ইরানের প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মাহশার। কিন্তু তাঁর পরিবারের দাবি, ওই তরুণীর আগে হৃদ্রোগ সংক্রান্ত কোনও লক্ষ্মণই ছিল না। মাহশার বাবা আমজাদ আমিনি বলেছেন, ‘‘ওরা (প্রশাসন) মিথ্যা কথা বলছে। সব মিথ্যা...। আমি কত যে কাকুতিমিনতি করেছি, কী বলব। আমার মেয়েকে দেখতে দেয়নি ওরা।’’
মেয়েকে যখন আমজাদ দেখলেন, তখন শেষকৃত্যের জন্য মাহশার নিথর দেহ রাখা হয়েছে। শরীর পুরো ঢাকা। শুধু মাত্র পা ও মুখ ঢাকা ছিল না। আমজাদের দাবি, মাহশার পায়ে ক্ষতচিহ্ন ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা আমার মেয়ের সঙ্গে কী করেছে, জানি না।’’
ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমে একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা দিয়েছে, মাহশাকে পোশাক নিয়ে ‘পরামর্শ’ দেওয়ার জন্য যেখানে নীতিপুলিশ নিয়ে এসেছে, সেখানে অচৈতন্য হয়ে পড়ছেন মাহশা।
গত সপ্তাহে ইরানে কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে যাচ্ছিলেন মাহশা। সে সময় পথে তাঁকে আটকায় নীতিপুলিশ। অভিযোগ, হিজাব ঠিকমতো না পরায় তাঁকে পাকড়াও করে নিয়ে যায় নীতিপুলিশের দল। এর পরই হেফাজতে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। মাহশার মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে ইরানের মহিলারা। নিজেদের চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। বিক্ষোভ প্রদর্শনে শামিল হয়ে ইরানে পুলিশের গুলিতে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
পরিস্থিতি সামলাতে ইরানে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবাও বন্ধ করা হয়েছে। বিক্ষোভ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইস বলেছেন, সে দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু যে ভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। ‘বিশৃঙ্খলা চলছে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy