ইরানের হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভ। সামনে মাহশা আমিনির ছবি। ফাইল চিত্র।
হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল ইরানের সেনার বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে ইরানের দুই শহর সানন্দাজ এবং সাক্কজে নতুন করে বিক্ষোভ দেখায় বেশ কিছু গণসংগঠন। সেই বিক্ষোভস্থলেই গুলি চলেছে বলে অভিযোগ প্রতিবাদকারীদের। এতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। যদিও এই দাবি মানতে চায়নি ইরানের সেনা।
জনৈক প্রতিবাদী নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সাক্কেজের স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করার পরেই সরকারের সশস্ত্র বাহিনী গুলি চালানো শুরু করে। তাঁর অভিযোগ, সরকার গায়ের জোরে আন্দোলন স্তব্ধ করতে চাইছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি এই বিক্ষোভ সম্পর্কে বলেন, “দেশের শত্রুরা ভাবছেন তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে তাঁদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করতে পারবেন। কিন্তু আমাদের পড়ুয়া এবং শিক্ষকরা জেগে উঠেছেন। তাঁরা তাঁদের স্বপ্নপূরণ হতে দেবেন না।’’
প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর হিজাব না পরার অপরাধে ইরানের মাহশা আমিনিকে আটক করে সে দেশের পুলিশ। তাঁকে গাড়ি করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। ঘণ্টা দুই পরে তাঁর পরিবারকে জানানো হয়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন মাহশা। কিন্তু মাহশার পরিবার অভিযোগ করে যে, তাঁকে খুন করা হয়েছে। মাহশার মৃত্যুর পরেই ইরানে প্রতিবাদের আগুন জ্বলে ওঠে। দেশের অন্তত ৫০টি শহর এবং গ্রামে প্রকাশ্যে হিজাব খুলে, তা পুড়িয়ে দিয়ে, চুল কেটে বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। তাঁরা ইরানের ‘গোঁড়া’ ধর্মীয় আচরণের বিরোধিতা করেন। দেশের প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই-এর তিন দশকের শাসনের অবসান চেয়ে তাঁরা স্লোগান তোলেন ‘স্বৈরাচারীর মৃত্যু চাই’।
শুধু ইরান নয়, সারা বিশ্বেই বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, নারী অধিকার সংগঠন এই ঘটনায় তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়। ভারতেও বেশ কিছু জায়গায় ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
অপর দিকে শুক্রবারই ইরানের ফরেন্সিক দফতর একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, মারধর বা মাথায় আঘাত নয়, ইরানের ২২ বছরের মাহশা আমিনির মৃত্যু হয়েছে শারীরিক অসুস্থতাতেই।পাশাপাশি এই বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়েছে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আট বছর বয়সে মস্তিষ্কে একটি টিউমারের জন্য জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছিল মাহশার। সেই অস্ত্রোপচারের ফলে তখন সুস্থ হয়ে উঠলেও পরিণত বয়সে সেই সংক্রান্ত অসুস্থতা ধীরে ধীরে ফিরে আসছিল। যদিও, এই বিষয়টি মানতে নারাজ মাহশার পরিবার। তাঁদের দাবি, মাথায়-ঘাড়ে আঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর। নীতিপুলিশ থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে তাঁর উপর। সেই বিষয়টি ঢাকতেই বার বার অসুস্থতার তত্ত্ব তুলে আনতে চাইছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy