Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলতে মরিয়া ইরান

ইরান সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ওই চুক্তি মোতাবেক বেশ কিছু ‘সীমা’ এখন থেকে তারা আর মানবে না।

সংবাদ সংস্থা  
তেহরান শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০৪:২০
Share: Save:

তাঁর পূর্বসূরির করা ইরান চুক্তি থেকে আচমকাই সরে এসেছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গেই তেহরান সরকারের উপরে আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিলেন তিনি। যার জেরে প্রবল ধাক্কা খায় ইরানের অর্থনীতি। সেটা ছিল গত বছর। এক বছর পরে, আজই ইরান সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ওই চুক্তি মোতাবেক বেশ কিছু ‘সীমা’ এখন থেকে তারা আর মানবে না। ইরান চুক্তিতে থাকা বাকি পাঁচটি দেশকে দু’মাস সময় দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি। ইঙ্গিত দিয়েছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা না উঠলে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে ফের ভাবনা-চিন্তা করবে তাঁর দেশ। আজ মন্ত্রিসভার একটি বৈঠক চলাকালীনই রৌহানি স্পষ্ট জনান, বেঁচে যাওয়া সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এবং ভারী জল এখন থেকে আর বিদেশে রফতানি করবে না তাঁর দেশ। যার অর্থ একটাই। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে কাজে লাগানো হবে সেগুলি। রৌহানির গোটা বিবৃতি সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে ইরানের টিভিতে।

ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করতেই তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ সালে ইরান চুক্তি সই করেছিলেন। ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, চিন এবং রাশিয়া ওই চুক্তির পক্ষ ছিল। চুক্তির অন্যতম শর্তই ছিল, দেশের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে কাজে লাগার পরে উদ্বৃত্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এবং ভারী জল অন্য দেশকে বিক্রি করে দিতে হবে ইরানকে। যা এখন থেকে আর তাঁরা মানবেন না বলে টুইট করেছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভাদ জ়ারিফ-ও। প্রেসিডেন্ট রৌহানি বলেছেন, ‘‘এই চুক্তিতে একটা অস্ত্রোপচার দরকার বলে আমরা মনে করি। কারণ এক বছর ধরে যে ঘুমের ওষুধ আমাদের দেওয়া হচ্ছিল, তাতে ফল হয়নি। আর এই অস্ত্রোপচারটা চুক্তিটাকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন। সেটাকে ধ্বংস করতে নয়।’’

গত বছর ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পরে ইরানের উপরে নতুন করে নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন। যার ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি তেহরান। আপাতত তাই নিষেধাজ্ঞা তুলতে মরিয়া ইরান সরকার। আর তার জন্য বল আপাতত বাকি পাঁচটি দেশের কোর্টে ঠেলেছে তারা। এর মধ্যেই আবার দু’দিন আগেই পশ্চিম এশিয়ার উপসাগরীয় অঞ্চলে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের গোষ্ঠী এবং বোমারু বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা। গত কাল আচমকা মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো ইরাক সফরেও যান। সেই সঙ্গে আমেরিকার আর এক বন্ধু দেশ ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিইয়াহুও স্পষ্ট জানিয়েছেন, তেহরানকে কোনও মতেই পরমাণু অস্ত্র বানাতে দেওয়া যাবে না। আমেরিকার তরফের বার্তা স্পষ্ট। তেহরান যদি কোনও ভাবে আমেরিকা বা তার শত্রু দেশগুলিকে আক্রমণ করার কথা ভেবে থাকে, তা হলে তার জবাব দিতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন। সে জন্যই ইরাকের সঙ্গে আলোচনা করে উপসাগরীয় অঞ্চল মার্কিন রণতরী আর যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা শুরু করেছে তারা। আর এই আবহেই আজ চুক্তিতে অংশ নেওয়া বাকি দেশগুলিকে কার্যত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন রৌহানি। তাঁর বার্তা, চুক্তির বাইরে গিয়ে কোনও কাজ তাঁরা করছেন না।

ইরানের বিদেশমন্ত্রী সরকারি সফরে রাশিয়া আছেন। আজ রৌহানির বার্তার পরে মুখ খুলেছে মস্কোও। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘আমাদের মনে হয় এখন সমাধানের সময়। আর তার জন্য ইউরোপের বাকি দেশগুলির উচিত চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Iran Donald trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy