ধ্বংসস্তূপ।—ছবি সংগৃহীত।
গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গিয়েছে হাসপাতাল। স্কুল বলে আর কিছু নেই। রাত হলেই অন্ধকার। জলের পাইপ ভেঙে গিয়েছে অধিকাংশ জায়গায়। অবিলম্বে শহরের পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্য আসছে, কিন্তু তা পৌঁছচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরে। এমনই সব অভিযোগ, হাহাকারে উত্তাল বেইরুট। পরিস্থিতির চাপে আজ ইস্তফা দেন তথ্যমন্ত্রী মানাল আব্দেল সামাদ। তিনি বলেন, ‘‘বেইরুটের বিপর্যয়ের পরে পদত্যাগ করছি। আমার ব্যর্থতার জন্য লেবাননের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’
গত কালের মতো আজও পথে নামেন বহু মানুষ। লেবাননের ম্যারোনাইট গির্জাও আজ সরকারের ক্ষমতানাশের দাবি তুলেছে। তাদের প্রধান বেচারা বুত্রোস আল-রাহিও বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে গলা মেলান। প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি। বলেন, ‘‘এ হল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। কোনও এক জন সাংসদ বা মন্ত্রী পদত্যাগ করলেই ব্যাপারটা মিটে যায় না।’’
৭০ লক্ষ মানুষের বাস লেবাননে। এর মধ্যে ৫০ লক্ষ লেবানিজ়। বাকি ২০ লক্ষ মানুষ সিরীয় ও প্যালেস্তাইনি শরণার্থী। আর এই ৭০ লক্ষের দেশ ১০ হাজার কোটি ডলারের দেনায় ডুবে। লেবাননের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা নাদিম হুরি বলেন, ‘‘লেবাননে বড় চোর আছে, ছোট চোরও আছে। কিন্তু ছোটখাটো চুরির জন্য আমরা আজ এই অন্ধকার গর্তে পড়ে নেই।’’
বেইরুট বিস্ফোরণের পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ দিনই লেবাননকে সাহায্য করতে একটি টেলিকনফারেন্সের আয়োজন করেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। গত সপ্তাহে তিনি বেইরুটেও গিয়েছিলেন। তাঁকে ঘিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মানুষ। দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের হাত থেকে বাঁচতে ফরাসি প্রেসিডেন্টের কাছে সাহায্য-ভিক্ষা করেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিষয়টির যথাযথ তদন্ত ও বিচারের দাবি উঠেছে। কেন সাত বছর ধরে পণ্য আমদানির মূল বন্দরে ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বোঝাই জাহাজ রেখে দেওয়া হয়েছিল, তার বিচার চায় সব পক্ষই। বিক্ষোভের মুখে মাকরঁ বলেন, ‘‘সাহায্যের অর্থ কোনও ভাবে দুর্নীতিগ্রস্তদের হাতে যাবে না। তবে লেবাননের সরকারে বদল প্রয়োজন।’’ লেবাননকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসা আর এক দেশ জার্মানিও ক্ষমতা-বদলের দাবি তুলেছে। তাদের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘লেবাননের মানুষদের দাবি যথার্থই।’’
একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণের কাজ সামলাচ্ছে বেইরুটে। দুর্নীতি এড়াতে ফ্রান্স, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া-সহ বহু দেশ সাহায্যের অর্থ পৌঁছে দিচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিংবা লেবানিজ় রেড ক্রসের হাতে। কিন্তু পুরো শহরটাকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে দিতে বহু কিছু প্রয়োজন। বিশেষ করে সরকারের যথাযোগ্য ভূমিকা। যা এক কথায় অসম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy