একজোট: প্যারিসে সিএএ-বিরোধী সমাবেশ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
‘আজাদি! আজাদি!’
স্লোগান উঠছে জোরদার। পথচলতি মানুষকে থমকে দিয়ে। হাড়-কাঁপানো শীতের বাতাসে ভর করে।
না, ভারতবর্ষ নয়। আমাদের চোখের সামনে যে আইফেল টাওয়ার!
গতকালের কথা। শনিবার, ৪ জানুয়ারি। প্যারিসের ত্রোকাদেরোয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে যে নিরন্তর প্রতিবাদ-সমাবেশ চলছে, তার সমর্থনে সমাবেশ করেছিলাম আমরাও। আমরা, মানে ফ্রান্সে বসবাসকারী কিছু উদ্বিগ্ন ছাত্র-ছাত্রী, কর্মী ও শিক্ষাবিদেরা।
বেলা বারোটায় ত্রোকাদেরো পৌঁছে দেখি গোটা চত্বর থিকথিক করছে, পর্যটকের ভিড়ে। পুলিশের কাছ থেকে আগেভাগে অনুমতি নিয়েই প্রতিবাদ প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা। ফ্রান্সের যে কোনও প্রতিবাদেরই মঞ্চ আইফেল টাওয়ারের সামনে এই ‘পারভিস্ দো ত্রোকাদেরো’। যখন আমাদের এই বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কথা, তখন সেখানে পৌঁছে দেখি, রয়েছে হংকংয়ের গণতান্ত্রকামী আন্দোলনের সপক্ষে প্রতিবাদকারী চিনাদের একটি দল। তাঁদের সমাবেশ শেষ হওয়ার পরই আমাদের প্রদর্শন শুরু হল। গলা ছেড়ে গেয়ে উঠলাম, ‘হম হোঙ্গে কমিয়াব!’ বোধহয় সত্যিই ‘সফল’ হলাম। থমকে গেলেন পর্যটকেরা, তাঁদের জিজ্ঞাসু দৃষ্টি ঘোরাফেরা করতে লাগল, আমাদের পোস্টারগুলোর উপরে। আমাদের দলেরই এক জন আমাদেরই তৈরি দ্বিভাষিক পুস্তিকা বিতরণ করতে লাগল কৌতূহলী পর্যটকদের। ইংরেজি ও ফরাসি, দু’ভাষাতেই ছিল পুস্তিকা।
আমরা শুরু করেছিলাম ভারতীয় সংবিধান পাঠ দিয়ে। মাঝেমধ্যেই রবীন্দ্রনাথের শরণাপন্ন হলাম। আর শেষ করলাম বিখ্যাত ফরাসি গাথা ‘ও মা বেল রেবেল’ দিয়ে। তত ক্ষণে হাঁটতে হাঁটতে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে পৌঁছে গিয়েছি আমরা।
সেখানেও আমাদের প্রতিবাদ নিঃশব্দে এবং নির্বিঘ্নেই চলছিল। এমন সময়ে বিজেপির কিছু স্থানীয় সমর্থক সেখানে এসে ভিড় জমালেন। আমরা গেয়ে উঠলাম— ‘উই শ্যাল ওভারকাম, আমরা করব জয়’। আমাদের ছবি তুলে, ‘ইমিগ্রেশনের সময়ে দেখে নেব’ হুমকি দিয়ে চলে গেলেন তাঁরা।
আমরা কিন্তু গান থামালাম না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy